1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ফরিদপুর নৌবন্দরে ভিড়তে পারছে না জাহাজ - Nadibandar.com
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৪ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ১৯৭ বার পঠিত

চলতি শুষ্ক মৌসুমে ফরিদপুরে পদ্মা নদীতে আবারও নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এতে পণ্যবাহী জাহাজ, কার্গো ও বড় ট্রলার চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দূরদূরান্ত হতে আসা এসব পণ্যবাহী জাহাজ নৌবন্দরে ভিড়তে পারছে না। ফলে নৌবন্দরের শুল্ক আদায়ও কমে গেছে। অন্যদিকে, এসব নৌযান হতে পণ্য খালাস করতে অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করে। তখন থেকেই এসব নৌযান নাব্য সংকটের কবলে পড়ে সিঅ্যান্ডবি ঘাটের বন্দরে আসতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। বর্তমানে এই দুরবস্থা চরমে পৌঁছেছে। বর্তমানে নাব্য সংকট রক্ষায় কয়েকটি স্থানে বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে খনন কাজ করছে। তবে খননের কয়েক দিনের মধ্যেই আবার বালু এসে ভরাট হয়ে যাচ্ছে বলেও জানা গেছে। দক্ষিণবঙ্গসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের ব্যাবসায়িক পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ নৌবন্দরটি শত বছরের প্রাচীন। ২০১৭ সালে সরকার এটিকে তৃতীয় শ্রেণির নৌবন্দর হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর এবং সিলেট, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থান হতে নৌপথে এই বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়া করা হয়। ফরিদপুরের সোনালি আঁশ খ্যাত পাট এই বন্দর হয়েই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বহির্বিশ্বে রপ্তানি হয়। এছাড়া সিলেট থেকে কয়লা ও বালু, কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা থেকে চাল এই পথে আমদানি হয়। নারায়ণগঞ্জ বন্দর থেকে আসা প্রচুর সিমেন্টবাহী জাহাজ ও কার্গো এই বন্দর হতে খালাস করা হয়। কিন্তু বর্তমানে যথেষ্ট নাব্য না থাকায় এবং অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় এসব পণ্যবাহী নৌযান বন্দরে আসতে পারছে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নৌবন্দরে ভিড়তে না পেরে অনেক দূরে দির্ঘীর চর, ভুঁইয়াবাড়ি ঘাট, খুশির বাজার, বাইল্যা হাটা, হাজিগঞ্জের চর, চরভদ্রাসনের এমপিডাঙ্গি ও গোপালপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নদীর তীরে পণ্যবাহী জাহাজ, কার্গো ও বড় ট্রলার ভেড়ানো রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ঘাট হতে এমন একটি সিমেন্টবাহী জাহাজের মাস্টার মো. দুলাল হাওলাদার বলেন, চরভদ্রাসনে এসে ঠেকে গেছি। আমার জাহাজে ১২ হাজার বস্তা সিমেন্ট আটে। কিন্তু পর্যাপ্ত গভীরতা নেই বলে ৮ হাজার আনতে হয়েছে। তিনি বলেন, এতে পণ্যের ভাড়াও কমে গেছে আমাদের। নৌবন্দরে ভিড়তে পারলে প্রতি বস্তা হতে ১৪ টাকা পেতাম। কিন্তু এখন এই ভাড়ার অর্ধেক দিয়ে আরেকটি ট্রলার ভাড়া করে মাল খালাস করতে হচ্ছে। এসব কারণে তাদের স্টাফ খরচ এবং অন্যান্য ব্যয়ও বেড়ে গেছে। এছাড়া জানমালের নিরাপত্তা নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন। এমভি ছায়ানীড় নামে আরেকটি জাহাজের মাস্টার মো. ফারুক বলেন, নাব্যতা না থাকায় জাহাজের ইঞ্জিনের পাখা ভেঙে যায়। সুখান আটকে যায়। জাহাজের অনেক ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, অন্তত পক্ষে ১০ হাত গভীর পানি থাকা প্রয়োজন ছিল কিন্তু সেখানে কোথাওবা দুই-তিন হাত পানি রয়েছে।

ড্রেজিংয়ের পরেও কেন নাব্যতা আসছে না এর কারণ জানতে চাইলে সেখানে ড্রেজিংয়ের কাজে নিযুক্তরা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, ড্রেজিংয়ের পরপরই আবার নতুন বালু এসে ভরে যাচ্ছে। পানিতে প্রচুর পলি রয়েছে। ফরিদপুর নৌবন্দরের পণ্য খালাসে নিযুক্ত প্রতিষ্ঠান লাকি ট্রান্সপোর্টের ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম বলেন, প্রায় ৮ হাজার কুলি শ্রমিক এই নৌবন্দরে কাজ করেন। অনেক ট্রান্সপোর্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীও রয়েছেন। জাহাজ কার্গো না আসায় তারা কাজ পাচ্ছে না। তিনি জানান, বছরের পাঁচ মাসের মতো সময় এখানে পানি কম থাকে বলে বন্দরে পণ্য খালাসে সমস্যা হয়। ফরিদপুরের সিঅ্যান্ডবি ঘাট হতে শুল্ক আদায়কারী বিআইডব্লিউটিএর কর্মচারী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দরে জাহাজ, কার্গো ও বড় ট্রলার ভিড়তে না পারায় তাদের শুল্ক আদায়ও কমে গেছে। তিনি জানান, আগে ঘাটটি ইজারা দেওয়া হতো। তবে এখন সরাসরি বিআইডব্লিউটিও এখানে শুল্ক আদায় করছে।

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর সংশ্লিষ্ট পোর্ট অফিসার মাসুদ পারভেজ বলেন, নৌবন্দরটিকে সচল করতে নৌ চ্যানেলে ড্রেজিং করা হচ্ছে। তবে এখনো পথটি বড় নৌযান চলাচলের উপযুক্ত হয়নি। আশা করছি চলতি মৌসুমেই এই সংকট কেটে যাবে।

নদী বন্দর / পিকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com