বরগুনার সদরে ময়নাতদন্তের জন্য নয় মাস পর কবর থেকে শিক্ষক নাসির হাওলাদার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বরইতলা এলাকা থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এ সময় নাসিরের স্বজন, এলাকাবাসী ও উৎসুক জনতা ভিড় জমান।
বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) শহীদুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালের ২৩ মে রাতে ঢলুয়া ইউনিয়নের গুলবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসির হাওলাদার নিজ বাড়িতে মারা যান। মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল স্ট্রোক। স্বাভাবিকভাবেই মরদেহ দাফন সম্পন্ন করেন নাসিরের স্বজনরা।
তিনি আরও জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি একটি মোবাইল ফোনে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস হয়। ওই রেকর্ড পুলিশের কাছে পৌঁছানোর পর বুধবার রাতেই নাসিরের ভাই আবদুল জলিল বরগুনা সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর পুলিশ নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা মিতু (২৪) এবং মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজু মিয়াকে (২০) আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী মিতু ও তার সহযোগী রাজু নাসিরকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
নিহত নাসির বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া এলাকার গয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি গালবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। গ্রেফতার ফাতেমা মিতু বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা এলাকার মো. মাহতাব মৃধার মেয়ে। তিনি বরগুনার থানাপাড়া এলাকায় বাবার ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রাজু মিয়া ঢলুয়া ইউনিয়নের গুলবুনিয়া এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি অপারেশন) স্বরজিত কুমার জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামালার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১২ ফেব্রুয়ারি বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাছে নিহতের মরদেহের ময়না তদন্তের আবেদন করি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতের বিচারক ইয়াসিন আরাফাত মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। এ কাজে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন আদালত।
তিনি আরও জানান, নিহতের মরদেহের অংশ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ঢাকার মহাখালী ল্যাবে পাঠানো হবে। শিগগিরই তদন্ত শেষে আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
নদী বন্দর / পিকে