কারাগারে মৃত্যুবরণ করা লেখক মুশতাক আহমেদ কোনো ধরনের ড্রাগ (ওষুধ) ব্যবহার করতেন কিনা এবং কীভাবে তার মৃত্যু হলো তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (১ মার্চ) দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সিনেমা হল নির্মাণ-সংস্কারে ব্যাংকঋণ চালুর প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রীকে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কারাসূত্র বলছে, মুশতাক এক ধরনের ড্রাগ ব্যবহার করতেন, এটার কোনো প্রভাব তার মৃত্যুর ক্ষেত্রে পড়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওনার (মুশতাক) মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সেটাতো আমি জানি না, এর জন্য একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বেরিয়ে আসবে উনি কোনো ড্রাগ ব্যবহার করতেন কিনা, ওনার কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে কিনা, কিংবা কারা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিলে কিনা সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তবে এ মৃত্যুর জন্য আমি নিজেও ব্যথিত। এটা অবশ্যই অনভিপ্রেত। তদন্ত কমিটি হয়েছে, কমিটির মাধ্যমে সব বেরিয়ে আসবে নিশ্চয়ই।’
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বিষয়ে বিভিন্ন দেশের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশে এ ধরনের আইন হয়েছে কিংবা হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতেও এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে গ্রেফতার করা হয় এবং শাস্তির বিধান করা হয়। তবে অবশ্যই এই আইনের যাতে কোনো অপব্যবহার না হয় সেজন্য আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
প্রেসক্লাবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রেসক্লাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ছাত্রদল যেভাবে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। হাজার হাজার ইট-পাথরের টুকরা তারা পুলিশের উপন নিক্ষেপ করেছে। প্রেসক্লাবে আমি নিয়মিত যাই, সেখানে তো কোনো পাথরের স্তুপ নেই, তারমানে এগুলো আগে থেকে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদলের ঘটনা হয়েছে, পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিকদের বা প্রেসক্লাবের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি আশা করব যারা প্রেসক্লাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, ছাত্রদদলসহ যারা প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায়, তাদের অবশ্যই এ ধরনের ঘটনা প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করে ঘটানো উচিত না।’
তিনি বলেন, ‘প্রেসক্লাব একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান, প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠান, প্রেসক্লাব নিরপেক্ষ জাতীয় প্রতিষ্ঠান। সব রাজনৈতিক দল, মত ও পথের জন্য এটি উন্মুক্ত। সুতরাং সেখান থেকে যদি পুলিশের ওপর হামলা হয়, লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করা হয় সেটা খুবই অনভিপ্রেত। ছাত্রদল যেটি চেয়েছে, দেশে একটি ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি মহল পানিকে ঘোলা করার চেষ্টা করছে। অতীতেও পানি ঘোলা করার চেষ্টা হয়েছে এবং এতে কোনো লাভ হয়নি, এবারও কোনো লাভ হবে না।’
পুলিশ প্রেসক্লাবের ঘটনার ক্ষেত্রে আরেকটু ধৈর্যের পরিচয় দিতে পারত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রদলের মারা ইটের আঘাতে একজন সাংবাদিক আহত হলেন, সেই প্রশ্ন আগে আসা উচিত ছিল। এটিএন বাংলার একজন সাংবাদিক ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন, তারা (ছাত্রদল) তো প্রথম দোষী। সুতরাং আমি অনুরোধ জানাবো এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত, দুঃজনক, এটা হওয়া অনুচিত। কেউ যেন এভাবে প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
নদী বন্দর / পিকে