বর্ষায় ফুঁসে ওঠা ব্রহ্মপুত্র স্বরূপ হারিয়ে শুষ্ক মৌসুমে পরিণত হয়েছে মরা খালে। পলি বহন করতে গিয়ে দীর্ঘতম ব্রহ্মপুত্র নদের অস্তিত্বই প্রায় বিপন্ন। গত কয়েক দশকে প্রস্থে দ্বিগুণ হলেও কমেছে গভীরতা। এ কারণে সংকটে পড়েছে ব্রহ্মপুত্রনির্ভর লাখো মানুষের জীবন-জীবিকা।
জানা গেছে, উত্তরের জেলা গাইবান্ধার ফুলছড়ি অংশে ব্রহ্মপুত্র নদ। চাষাবাদে সহযোগী হলেও পানিশূন্য প্রায় ব্রহ্মপুত্রে চলছে ঘোড়ার গাড়ি। অভ্যন্তরীণ নৌরুট বন্ধ হওয়ার পর পানির অভাবে ঠেলে-ঠুলে চলছে আন্তঃজেলা রুটের কয়েকটি নৌকা। যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে সংকটাপন্ন কৃষি, জীববৈচিত্র্য আর জীবন-জীবিকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, দ্বিগুণ হয়ে এলাকাভেদে ব্রহ্মপুত্রের প্রস্থ ঠেকেছে ১৬ থেকে ১৮ কিলোমিটারে। বছরে সাড়ে ৭২ কোটি মেট্রিক টন পলি বহন করতে গিয়ে কমেছে গভীরতাও। শত শত চর-দ্বীপচর জেগে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য চ্যানেল। নাব্য সংকটে মৃত প্রায় ব্রহ্মপুত্র বাঁচাতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা চান সংশ্লিষ্টরা।
কৃষক নেতা আমিনুল ইসলাম গোলাপ জানান, পানি না থাকায় এখানের কৃষিকাজ ও জীববৈচিত্র্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
গাইবান্ধা জলবায়ু পরিষদের জিএসএম আলমগীর জানান, পানি ধারণের যদি একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। তাহলে শীতে মৌসুমে তা আমার চাষাবাদে ব্যবহার করতে করা যাবে।
১৯৮৮ সালের বর্ষায় ব্রহ্মপুত্র নদে সর্বোচ্চ পানিপ্রবাহ ৯৮ হাজার ৬০০ কিউসেক রেকর্ড করা হলেও এবার শুষ্ক মৌসুমে মানুষ হেঁটেই পাড়ি দিচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ। তবে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্রহ্মপুত্র নদের প্রস্থ কমানোর চিন্তা কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান।
১৯৩৮ সালে গাইবান্ধার তিস্তামুখ-বাহাদুরাবাদ রুটে ফেরি চলাচল শুরু হলে সময় ও খরচ বাঁচাতে নৌপথে যাতায়াত করত আট জেলার মানুষ। নাব্য সংকটের কারণে বালাসীতে ঘাট স্থানান্তর করা হলেও একই কারণে ২০০৪ সালে বন্ধ হয় বালাসী-বাহাদুরাবাদ নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ সার্ভিস।
নদী বন্দর / এমকে