বিয়ের এক বছর পেরোতে না পেরোতেই স্বামীর বাড়ি থেকে দেবী দাস (১৮) নামক এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে কলমাকান্দা থানার পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকালে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামে।
মৃতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের প্রাণেশ দাস কাজের সুবাদে তার স্ত্রী মেয়ে দেবীসহ সকলেই ঢাকার বিক্রমপুর থাকতেন। পরে মোবাইলে প্রেম হয়ে একই এলাকার পনার পারুয়া গ্রামের সুনীল দাসের ছেলে সজিব দাসের সাথে। এক বছর আগের সজিব বিক্রমপুর থেকে দেবীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। এরপর তাদের দাম্পত্য জীবনে গর্ভে সন্তান আসলে সজিব জোরপূর্বক দেবীর গর্ভপাত ঘটায়।
সোমবার সকালে স্থানীয় লোকজনের মারফত খবর পেয়ে কলমাকান্দা থানার পুলিশ সজিবের বাড়িতে গিয়ে দেখে ঘরের মেঝেতে মৃত অবস্থায় গৃহবধু দেবীর মরদেহ পড়ে রয়েছে। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
এদিকে সজিবের পরিবার দেবীর পরিবারকে ফোন করে জানায়, গলায় ফাঁস নিয়ে দেবী আত্মহত্যা করেছে। হাসপাতালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে দেবীর মা কল্পনা দাস, বোন ঝুমা দাস ও ভাই পরিতোষ দাস জানায়, প্রেম করে দুজনই পালিয়ে বিয়ে করে। এরপর থেকেই যৌতুকের জন্য দেবীর শ্বাশুড়ী দেবীকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল। প্রেম করে বিয়ে করায় দেবী মুখ বুঝে সব অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে আসছিল। সজিব ও তার মা আমার মেয়েকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
দেবীর স্বামী সজিব দাস বলেন, স্ত্রীকে নিয়ে রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে উঠে দেখি দেবী পাশের রান্না ঘরের আড়ার সাথে ঝুলছে। তখনও তার হাত পা নাড়া ছাড়া করতে দেখে দ্রুত নামিয়ে আনলেও দেবীকে আর বাঁচাতে পারিনি। এ ব্যাপারে কলমাকান্দার থানার অফিসার ইনচার্জ এ টি এম মাহমুদুল হক দেবীর শ্বশুর বাড়ির বরাত দিয়ে জানান, তারা যখন নামিয়েছিলো তখন নাকি হাত পা নাড়াচ্ছিলো। কিন্তু লাশ কোথায় পাওয়া গেছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেঝেতে শুয়ানো অবস্থায়। এ ব্যাপারে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নদী বন্দর / জিকে