সোমবার (০৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ উপকূলে বঙ্গোপসাগরের ১৭ বাইন নামক এলাকায় মাছটি জালে আটকা পড়ে।
মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ মাছটি হংকংয়ে রপ্তানি হবে। আর মাছটির ফুসফুস দিয়ে বিশেষ ধরনের স্যুপ ও এয়ার ব্লাডার দিয়ে বিশেষ ধরনের অপারেশনাল সুতা তৈরি হয়। তাই মাছটির এতো দাম।
গত শনিবার সকালে ১০ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রীপাড়ার মৃত কাদির হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ শাহ আলমের মালিকানাধীন ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। এসময় মাছ ধরার জন্য লাক্ষা জাল সাগরের ফেলা হয়। প্রথম দফায় ইলিশ, রূপচান্দা ও লাল কোরালসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেড় লক্ষাধিক টাকার মাছ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় দফায় আবারও জাল ফেলা হলে কয়েকটি ইলিশ ও রূপচাঁদা সঙ্গে কালা পোপা মাছটি জালে আটকা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে জেলেরা ট্রলার থেকে মালিক (মোহাম্মদ শাহ আলম) কে অবহিত করলে টেকনাফে চলে আসার জন্য বলা হয়।
ওই ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ শফিক বলেন, সাগরের ফেলানো জালটি বারবার টান দিচ্ছিল। মনের মধ্যে ধারণা হলো বড় কিছু লেগেছে। তারা তখন জাল টেনে কাছে আনে বড় মাছ দেখে জেলেরা আনন্দে দিশেহারা হয়ে পড়ে। তীরে আসার সঙ্গে সঙ্গে জালে বড় মাছ ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে টেকনাফে কায়ুকখালীয়া মৎস্য ঘাটে এসে পৌঁছালে উৎসুক জনতা মাছটি দেখতে ভিড় জমায়। ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছেন সাবরাং রুহুল্লাহ ডেপার আজিজুল্লাহ ছেলে মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম। বর্তমানের মাছটি তার ফিশারিজে রয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ী ও আড়ৎদার নুরুল ইসলাম বলেন, এ মাছের ফুসফুসের দাম অনেক বেশি হওয়ায় চট্টগ্রামে নেওয়া যায় কি না, সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
নুরুল ইসলাম বলেন, তিনি ঝুঁকি নিয়ে মাছটি কিনতে চাইলেও এখন পর্যন্ত বেচা হয়নি। মাছটি কেটে বিক্রি করলে প্রতি কেজির দাম ৭০০ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না। সেই হিসেবে ২৫ হাজার ৫০০টাকা পাওয়া যাবে। তবে এরমধ্যে ফুসফুসটির দাম অনেক চড়া। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পি কে দাশের কাছে তিনি মাছটি বিক্রি করবেন। তিনি বিদেশে মাছ ও মাছের ফুসফুস রপ্তানি করে থাকেন। যদি ফাৎনা বা ফুসফুসটির ওজন ৯০০ গ্রামের উপরে হয় তবে এটি বিক্রি করে ভালো লাভ হবে। আর ওজন কম হলে লোকসান গুনতে হবে।
টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে ৩৭ কেজি ওজনের বড় পোপা মাছটি ধরা পড়ার খবর শুনেছেন। সাধারণত এত বড় পোয়া মাছ সহজে ধরা পড়ে না। পোয়া মাছের বায়ুথলি বা এয়ার ব্লাডারের কারণে মাছটির অত্যধিক মূল্য। এয়ার ব্লাডার দিয়ে বিশেষ ধরনের অপারেশনাল সুতা তৈরি হয় বলে মাছটির এতো দাম বলে তিনি জানান।
নদী বন্দর / পিকে