1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
সৈকতে ২ মিনিটে কুড়িয়েছেন ৩ শতাধিক ব্যবহৃত মাস্ক - Nadibandar.com
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১
  • ২৭৬ বার পঠিত

কামরুল হাসান; পেশায় একজন লাইফ গার্ড কর্মী। কিন্তু সৈকতে পর্যটকদের সমুদ্র স্নানে নিরাপত্তার পাশাপাশি এখন বালিয়াড়িতে কুড়িয়ে বেড়ান পর্যটকদের ফেলে দেওয়া ব্যবহৃত মাস্ক।

সম্প্রতি পর্যটকদের মাস্ক ব্যবহারে প্রশাসনের কড়াকড়িতে বালিয়াড়িতে ফেলে দেওয়া ব্যবহৃত মাস্কের ছড়াছড়িতে নিজ দায়িত্বে এই কাজ করছেন তিনি।

রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে সৈকতে সুগন্ধা পয়েন্টে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে চলে যাওয়ার পর কামরুল হাসান মাত্র দুই মিনিটের কুড়িয়েছেন ৩ শতাধিক ব্যবহৃত মাস্ক।

সি-সেইভ লাইফ গার্ড সংস্থার কর্মী কামরুল হাসান জানান, সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়াও প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আসছেন। করোনার সংক্রমণ রোধে সৈকতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং লাইফ গার্ডরা পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরার জন্য বলছে। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে পর্যটকরা মাস্ক কিনে মুখে দেন। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট চলে গেলে পুনরায় মাস্ক বালিয়াড়ি, সৈকতের পানিতে ফেলে দেন। যার কারণে এসব ব্যবহৃত মাস্কের মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

কামরুল হাসান বলেন,  ‘সৈকত থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার দুই-তিনের মধ্যে বালিয়াড়ি থেকে প্রায় ৩’শ ব্যবহৃত মাস্ক কুড়িয়েছি। এরকম দেখা যাবে, সৈকতের পানিতে এবং বালিয়াড়িতে হাজার হাজার ব্যবহৃত মাস্ক পড়ে রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিদিনই সৈকতের সীগাল থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত ৩ হাজারের অধিক বালিয়াড়িতে পড়ে থাকা ব্যবহৃত মাস্ক কুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসি।’ 

 

লাইফ গার্ড কর্মী কামরুল হাসান পর্যটকদের অনুরোধ করে বলেন, ‘দেশের নানাপ্রান্ত থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে আসলে অবশ্যই দয়া করে নিজের ব্যবহৃত মাস্কটি ডাস্টবিনে ফেলবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, মাস্ক ব্যবহার করুন; নিজে সুস্থ থাকুন, অন্যজনকে সুস্থ রাখুন এবং সৈকতকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।’

কক্সবাজার সৈকতে গোসল করার সময় পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন প্রায় ২৫ জনের অধিক লাইফ গার্ড কর্মী। সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচ কর্মী ও জেলা প্রশাসনের জোর প্রচার ও অভিযান চলছে। যার প্রেক্ষিতে অভিযান চললেই পর্যটক মাস্ক ব্যবহার করেন। আর অভিযান শেষ হয়ে গেলে ব্যবহৃত মাস্কটি বালিয়াড়িতে ফেলে দেন। আর বালিয়াড়িতে পড়ে থাকা এই মাস্কটি নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার করেন এই লাইফ গার্ড কর্মীরা।

তার মধ্যে সী-সেইভ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ মোহাম্মদ ওসমান একজন। ওসমান বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে সৈকতে হাজার হাজার ব্যবহৃত মাস্ক পড়ে থাকে। প্রতিদিনই ভোর ৬টায় উঠে সৈকতে দায়িত্ব পালন করতে গেলে প্রথমে হেঁটে হেঁঠে সৈকতের পানিতে বা বালিয়াড়িতে পড়ে ব্যবহৃত মাস্কগুলো সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলি। গত কয়েকদিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই ৫ হাজারের অধিক মাস্ক কুড়িয়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলছি। এখানে পর্যটকদের চরম অসচেনতা কাজ করছে।’

এদিকে, সৈকত শহর কক্সবাজারে মাস্ক ব্যবহারে প্রশাসনের অভিযান ও নির্দেশনা কোনভাবেই মানছেন না পর্যটকরা। সৈকতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালালে বেড়ে যায় মাস্কের ব্যবহার। কিন্তু না থাকলে পর্যটকদের মুখে থাকে না মাস্ক। আর সৈকতে বালিয়াড়িতে যত্রতত্র পড়ে রয়েছে পর্যটকদের ব্যবহৃত মাস্ক।

রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে সৈকতে পর্যটকদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতের জন্য মাইকিং করে জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে চলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া সুলতানার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। অভিযানে দেখা যায়; পর্যটকদের মুখে মুখে মাস্ক। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট যাবার এক মিনিটের পর একই স্থানে দেখা যায় অনেকের মুখে মাস্ক নেই।

রহিম উদ্দিন নামের একজন পর্যটক বলেন, ‘মাস্ক ছিল। কিছুক্ষণ আগে বালিয়াড়িতে পড়ে গেছে। আবার কিনে নিয়ে মাস্ক ব্যবহার করবো।’

সাজেদা নামের এক নারী পর্যটক বলেন, ‘সরি; সরি। মাস্ক ছিল। কিন্তু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফেলি দিয়েছি। সৈকত থেকে উঠলে আবারও মাস্ক কিনে ব্যবহার করবো।’

তবে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘পর্যটকদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতে মাইকিং করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সবাইকে কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারের জন্য অনুরোধও করা হচ্ছে। তারপরও সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা পর এটি যাতে নির্দিষ্ট ডাস্টবিন বা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা হয় সেটিও বলা হচ্ছে। সচেতন করার পরও পর্যটকরা মাস্ক ব্যবহার না করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে, বিকেল ৫টায় করোনার সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের কার্যক্রম পরিদর্শনে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে যান জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান ও সির্ভিল সার্জন মাহাবুবুর রহমান। আর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের পানবাজার এলাকায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রচারণা চালান এবং বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করেন তারা।

নদী বন্দর / পিকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com