দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকায় এবার কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে আশানুরূপ দাম না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা। কলাপাড়া উপজেলায়ই এবার ৫০০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ৪ টন মরিচ উৎপাদন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
কৃষকরা গত কয়েক বছরে ভালো দাম পাওয়ায় মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়ছে। ভাগ্য ফেরানোর যুদ্ধে দিনরাত পরিশ্রম করছে তারা। কৃষকরা ক্ষোভের সুরে বলেন, পর্যাপ্ত পানির অভাবে ভোগান্তির শেষ নেই। খালগুলো মরে যাওয়ায় ও পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় গাছে ঠিকমত পানি দিতে পারছি না। গত ১৫ দিন ধরে স্থানীয় বাজারগুলোয় কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন কৃষকরা। এ বছর বাম্পার ফলন হওয়া সত্ত্বেও দাম কম পাওয়ায় হতাশার দোলাচলে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
সম্প্রতি মহিপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা মরিচ এলাকার পাইকাররা ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে। কেউ সরাসরি দেশের বিভিন্ন আড়ৎদারে পাঠাচ্ছেন। প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৪০ টনের মতো কাঁচা মরিচ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। কুয়াকাটা, ধুলাসার, গঙ্গামতি, নীলগঞ্জ, মহিপুর, আলীপুর, লতাচাপলীসহ বিভিন্ন এলাকায় পাইকাররা ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ ক্রয় করছে।
লতাচাপলি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মো. আফজাল ভদ্র জানান, এবারে ৪ একর জমিতে মরিচ চাষ করেছি। বর্তমানে এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম ২০-২৫ টাকা। এতে খরচের টাকাও উঠে না। এ পর্যন্ত আমার সার, ঔষধ ও পানি-সেচ বাবদ ৩ লক্ষ খরচ হয়েছে। ন্যায্য দাম পেলে ৫ লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পারব।
মহিপুরের স্থানীয় আড়তদার রাকিব বলেন, লতাচাপলী ইউনিয়নে প্রচুর মরিচ উৎপাদন হয়। আমরা এলাকার কৃষকদের থেকে ক্রয় করে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করি। গত এক সপ্তাহ ধরে বাজার শুরু হলেও আরও ৩ মাস যাবত চলবে। এই হাটে স্থানীয় কৃষক ছাড়াও অন্যান্য এলাকার লোকজন কাঁচা মরিচ নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, পানি সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে বিভিন্ন খাল খনন শুরু হয়েছে। যে এলাকায় খাল নেই সে এলাকাতে সরকারী খাস পুকুর কাটার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে শুকনা মৌসুমেও পানি ধরে রাখা যায়।
নদী বন্দর / জিকে