প্রায় আট বছর আগে মিসরের একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার মামলায় গত সোমবার ১৭ আসামিকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ব্রাসেলস-ভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংগঠন এ তথ্য জানিয়েছে। তবে বার্তা সংস্থা এপি বলছে, এদিন ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হয়েছে নয় আসামিকে।
উই রেকর্ড নামে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্ল্যাটফর্ম টুইটারে জানিয়েছে, ২০১৩ সালে কায়রোর কেরদাসা পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনায় জড়িত ১৭ আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।
তবে মিসরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের বরাতে এপি জানিয়েছে, ওই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ আসামির মধ্যে নয়জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
এসব আসামি মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ২০১৩ সালে কেরদাসা শহরের একটি পুলিশ স্টেশনে হামলা করেছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরের বছরই স্থানীয় একটি অপরাধ আদালত ১৮৮ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে ২০১৭ সালে সেই রায় বদলে চূড়ান্ত রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও কয়েক ডজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে ১১ পুলিশসহ ১৫ জনকে হত্যা, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন ও আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অভিযোগ আনা হয়। এসব আসামির মধ্যে অনেকেই মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য বলে সন্দেহ রয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মিসরীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার দেশটির বেহেইরা অঞ্চলের ওয়াদি নাতরুন কারাগারে এসব আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
এদিকে মিসরে এসব আসামিকে ‘চূড়ান্ত অন্যায় বিচার’-এর মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলেছে, পবিত্র রমজান মাসে এসব ফাঁসি কার্যকর করে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ডের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার অব্যাহত রাখার নির্মম সংকল্প প্রদর্শন করেছে।
এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্যে করেনি মিসরীয় কর্তৃপক্ষ।
অ্যামনেস্টির হিসাবে ২০২০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম মিসর। এক্ষেত্রে চীন ও ইরানের পরেই তাদের অবস্থান। গত বছর আরব বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দেশটি অন্তত ১০৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিল।
নদী বন্দর / জিকে