বর্ষায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়িয়ে দেয়। এ সময় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে শুরু করে। একদিকে মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাব অন্যদিকে বর্ষায় রোগব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা- সব মিলিয়ে এ সময় সুস্থ থাকা অনেকটা চ্যালেঞ্জের বিষয়।
বর্ষার শুরু থেকে ছোটদের তো বটেই বড়রাও ছোট-বড় নানা রোগে ভোগেন। বিশেষ করে সর্দি-কাশি এবং ভাইরাল ফিভারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
এ সময় সুস্থ থাকতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যতটা সম্ভব বাড়ানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এজন্য বেশকিছু খাবার আছে, যা বর্ষায় খাওয়া উচিত রোগ প্রতিরোধ বাড়ানোর জন্য। জেনে নিন কোন খাবারগুলো খাবেন বর্ষায়-
টকদই: উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে টকদইয়ে, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্রই ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়। সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। টকদইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক অন্ত্রে ভালো ব্য়াকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়। তাই পেটের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই বর্ষাকালে সুস্থ থাকতে দিনে এক বাটি করে টকদই খেতে ভুলবেন না।
মাশরুম: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মাশরুম খুবই উপকারী। কারণ এতে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন বি। ফলে শরীরে সেলেনিয়াম নামক একটি উপাদানের কারণে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে নানাবিধ সংক্রমণকেও দূরে রাখে। তাই বর্ষায় রোগ-ব্যাধি দূরে রাখতে মাশরুম খান।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: শরীরে পেশি উন্নত করে প্রোটিন। বর্ষাকালে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি মেটানো অধিক জরুরি। কারণ এ উপাদানটি শরীরের শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে না। বর্ষাকালজুড়ে ডাল, ছোলা এবং বিনসের মতো খাবার নিয়মিত খেতে হবে। পাশাপাশি বিফ, মাটন অথবা চিকেনের মতো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে।
মসলা চা: ইমিউন বুস্টার হিসেবে কাজ করে এক কাপ মসলা চা। এক চিমটি দারুচিনি গুঁড়ো, লবঙ্গ বা গোলমরিচ মিশিয়ে যদি চায়ের মতো খাওয়া যায়; তাহলে শরীরে মিলবে মসলায় উপস্থিত নানা ভিটামিন এবং মিনারেল। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। সেই সঙ্গে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণু শরীরে বাসা বাঁধবে না।
দুধ-হলুদ: এক গ্লাস দুধে দুই চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে বর্ষাকালীন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। কারণ দুধ এবং হলুদে আছে একাধিক উপকারী ভিটামিন এবং মিনারেল, সেই সঙ্গে মজুত রয়েছে নানা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদানও।
রসুন: হৃদরোগ থেকে শরীরে নানা সমস্যার সমাধান করে রসুন। তেমনই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতেও রসুনের কোনো বিকল্প নেই। কারণ এতে আছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়ামসহ নানা উপকারী উপাদান, যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো মুহূর্তেই ধ্বংস করে। তাই সুস্থ থাকতে শুধু বর্ষাকালে নয়, সারা বছরই এক কোয়া করে রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
নদী বন্দর / এমকে