পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় দেশটির সামরিক বাহিনীর ১২ সদস্য নিহত হয়েছেন। এসময় তীব্র গুলি বিনিময়ে ১৩ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে সেনাবাহিনী।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবার ভোরের দিকে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের প্রত্যন্ত এক এলাকায় সামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। তীব্র গোলাগুলিতে ১২ সৈন্য শহীদ হন এবং ১৩ জন ‘খোয়ারিজ’কে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় আরও অন্তত চার সেনা আহত হয়েছেন।
আফগান তালেবানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পাকিস্তানি ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)- এর সন্ত্রাসীদের সম্বোধন করতে ‘ফিতনা আল খোয়ারিজ’ শব্দটি ব্যবহার করে পাকিস্তান সরকার এবং ভারতের মদদে গোষ্ঠীটি জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘গত বুধবারও বাজাউরে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচালিত একটি গোয়েন্দা-ভিত্তিক অভিযানে (আইবিও) ভারত সমর্থিত ২২ জন খোয়ারিজকে নরকে পাঠানো হয়েছে, যারা এই অঞ্চলগুলোতে অসংখ্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল। এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।’
এদিকে শনিবারের হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে টিটিপি। গোষ্ঠীটি সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র ও ড্রোন লুট করার দাবিও করেছে।
মূলত, ২০২২ সালের শেষের দিকে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করার পর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশের ওপর ব্যাপকহারে হামলা চালিয়ে আসছে টিটিপি। বিশেষ করে খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজ, গত কয়েক মাস ধরে, বান্নু, পেশোয়ার, কারাক, লাক্কি মারওয়াত এবং বাজাউরসহ খাইবার-পাখতুনখোয়ায় একাধিক এলাকা পুলিশ বাহিনীর ওপর ধারাবাহিক হামলার শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালে জঙ্গিরা দেশব্যাপী ৩৩৫টি হামলা চালিয়ে ৫২০ জনকে হত্যা করে।
পাকিস্তান সরকার বলেছে, ভারতের সমর্থনে জঙ্গিরা প্রতিবেশী আফগানিস্তানের ভেতর থেকে তাদের তৎপরতা চালায়, যেখানে তারা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং হামলার পরিকল্পনা করে। তবে কাবুলের তালেবান সরকার ও নয়াদিল্লি এই অভিযোগ বারবারই অস্বীকার করেছে।
সূত্র: ডন
নদীবন্দর/এএস