1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ভাঙনের মুখে বৃদ্ধ দম্পতির ভিটেবাড়ি, করোনায় ঘরে নেই খাবার - Nadibandar.com
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘আমি আসছি, দেখা হবে ইনশাআল্লাহ’— প্রশিক্ষককে বলেছিলেন নিহত পাইলট তৌকির মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক, তবে চলবে এইচএসসি পরীক্ষা উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত বেড়ে ২০ রক্তের প্রয়োজন নেই, ভিড় না বাড়ানোর অনুরোধ বার্ন ইনস্টিটিউটের বিমান বিধ্বস্ত: শিক্ষার্থীদের বাঁচিয়ে শিক্ষিকা লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে বিমান দুর্ঘটনা: এক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: রাষ্ট্রপতির গভীর শোক প্রকাশ সাগরিকার এক হালিতে বিধ্বস্ত নেপাল, সাফে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ হতাহতদের ছবি বা ভিডিও প্রকাশ না করার আহ্বান আইন উপদেষ্টার বিমান বিধ্বস্ত: আগুন থেকে বেঁচে ফেরা এক শিক্ষকের ভয়াবহ বর্ণনা
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১
  • ১৮৪ বার পঠিত

‘আর একটা বান আসলে আমার বাড়ি উড়ি যাইবে, আমরা কি করিয়া থাকমো, কোথায় যামো আমাদের কোনো পথ নাই।’ এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী এলাকার সত্তরোর্ধ্ব তিস্তা পাড়ের মতিয়ার রহমান।

তিনি আরও বলেন, ‘এই বাড়ির ভিটাটুকু নদীত ভেঙি গেলে নিরাশ্রয় হয়ে যাব। যেটুকু জমি ছিল সব নদীতে ভেঙি গেইছে, যেটুকু আছে সেটুকু এবার বান আসলে থাকিবে না।’

তিস্তা নদী ভাঙতে ভাঙতে বৃদ্ধ মতিয়ার রহমানের বাড়ির ভিটের কাছেই চলে এসেছে। যেকোনো সময় শেষ সম্বলটুকু নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এই ভিটেবাড়ি নদীতে ভেঙে গেলে তাদের থাকার আশ্রয় নেই। তাই বৃদ্ধ মতিয়ার ও স্ত্রী ছকিমন নদী পাড়ে বসে বিলাপ করছেন।

 

খোঁজ জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের ৩ নং ভোটমারী গ্রামের বৃদ্ধ মতিয়ার ও স্ত্রী ছকিমন। বৃদ্ধ মতিয়ার গত পাঁচবছর ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। জায়গা জমি বলতে বাড়ির ভিটের ২০ শত জমি। সংসারে স্ত্রী ও এক ছেলে ও চার মেয়ে।

জায়গা জমি বিক্রি করে চার মেয়ের বিয়ে দেন। এক ছেলে ঢাকায় পোশাক শ্রমিকের কাজ করেন। করোনা পরিস্থিতিতে চলমান কঠোর বিধিনিষেধে ছেলে ঢাকা থেকে টাকাও পাঠাচ্ছেন না। তাই ওই দম্পতি অতি কষ্টে দিন পার করছেন। ঘরে তাদের কোনো খাবারও নেই।

বৃদ্ধ মতিয়ার রহমানের ও স্ত্রী ছকিমন নেছা বলেন, ‘নদীর ওপর পড়ে আছি খানা দানা নাই। আমরা কী করি চলমো, যেটুকু জমি ছিল নদীত চলি গেইছে। বাড়িটা যে ভাঙি নিয়া যামো তারেই কোন পদ নাই। হামা খামো তারেই দানা নেই ঘরত।’

এদিকে ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তীব্র আকারে ধারণ করেছে তিস্তার ভাঙন। তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে উঠতি ফসলসহ বসত বাড়ি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। গত সাত দিনের টানা ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের পরিবারগুলো। একদিকে করোনাভাইরাস, অন্যদিকে তিস্তার অব্যাহত ভাঙনের মুখে পড়ে বেসামাল হয়ে গেছে তিস্তাপাড়ের হাজারও মানুষজন।

নদী ভাঙন বদলে দিয়েছে জীবন ও জীবিকা। এক রাতেই চোখের সামনে শেষ হয়ে যায় সারা জীবনের উপার্জন। নদী ভাঙন কেড়ে নেয় শেষ অবলম্বন টুকু। সম্পদ হারালেও শেষ হয় না নদী পাড়ে বসবাসকারী মানুষগুলোর দুর্দশার কাহিনী।

 

তিস্তার ভায়াবহ ভাঙনে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে তিস্তা পাড়ের কলোনি পাড়া, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের কুটিরপাড়, বালাপাড়া, বাদিয়ারটারী ও চৌরাহা, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী শৈইলমারী, হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না, সিংঙ্গীমারী, গড্ডিমারী, পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম এলাকায় এই বছরে বিলীন হয়েছে প্রায় এক হাজার পরিবারের বসতভিটা। এছাড়া অর্ধশত বসতভিটা ও শতাধিক একর আবাদিজমি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

লালমনিরহাট সদরের মোগলহাট ইউনিয়নে ধরলাপাড়ের চর খারুয়া বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রটি ভাঙন হুমকিতে পড়েছে। এ আশ্রয়কেন্দ্রটি থেকে মাত্র ৪০ মিটার দূরে আছে ধরলা নদীর ভাঙন। এটি নদীগর্ভে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, ধরলা ও তিস্তার ভাঙন এলাকা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ফান্ড না থাকায় জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

নদী বন্দর / জিকে

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com