1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
এবারও কোরবানির হাট মাতাবে মিরকাদিমের ধবল গরু - Nadibandar.com
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪০ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১
  • ১৬১ বার পঠিত

গায়ের রং ধবধবে সাদা, কোনটির চোখ কাজল কালো আবার কোনটির গোলাপি। বাহ্যিক গঠন গড়নে অনন্য সৌন্দর্যের এসব গরুর মাংসও বেশ সুস্বাদু। বলা হচ্ছে দেশব্যাপী সুখ্যাতি ছড়ানো মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমের ধবল গরুর কথা।

রাজধানী ঢাকার কোরবানি হাটে বরাবরই ক্রেতাদের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে থাকে মিরকাদিমের ধবল (সাদা) গরু। বিশেষ করে পুরান ঢাকার মানুষের প্রথম পছন্দ এ গরু।

কোরবানি উপলক্ষে প্রতিবছর মিরকাদিমে ধবল গরু পালন করার ঐতিহ্য শতবছরের প্রাচীন। এবছরও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ধবল গরু প্রস্তুতের শেষ সময়ে ঘাম জরাচ্ছেন মিরকাদিমের খামারি ও ব্যাপারীরা। খামারিদের আশা হাটে পাওয়া যাবে ভালো দাম। তবে করোনা পরিস্থিতি আর গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে খরচ পুষিয়ে লাভবান হওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন কেউ কেউ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিরকাদিমে প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে খামারিরা পালন করেন এসব গরু। শত বছরের বেশি সময় ধরে ধবল গরু প্রস্তুত করা এ এলাকার খামারিদের কাছে ঐতিহ্যও বটে। একসময় মিরকাদিমে বাড়ি বাড়ি এসব গরু পালন করা হলেও সময়ের সঙ্গে কমে এসেছে তা। বিগত কিছু বছর নানা প্রতিবন্ধকতায় ধবল গরু পালন অনেকটা বিলুপ্তির শঙ্কাকাও দেখা দেয়, তবে এ বছর বেড়েছে এসব গরু পালন। বেড়েছে খামারের সংখ্যাও।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বছর মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার কমলাঘাট বন্দর, নগর কসবা, এনায়েত নগর, টেঙ্গর, নৈদীঘির পাথর, রিকাবীবাজার এলাকার ব্যাপারীরা খামারে ধবল গরু প্রস্তুত করছেন। খামারগুলোতে হাফসা, বুট্টির পাশাপাশি সিন্ধি জাতের গরুও পালন করেছেন খামারিরা। আকৃতি আর ওজন অনুযায়ী একেকটি হাফসা জাতের গরু এক থেকে ৫ লাখ টাকা হাঁকানো হচ্ছে।

খামারিরা জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাছাই করে ধবল বাছুর কিনে আনা হয়। এরপর ছয় থেকে আট মাস ধারাবাহিক যত্ন-পরিচর্যা করে একেকটি গরুকে বড় ও কোরবানির হাটে বিক্রির উপযোগী করে তোলা হয়। খাওয়ানো হয় স্থানীয় মিরকাদিম বন্দরের বিভিন্ন কারখানার খৈল, ভুসি, চালের খুদ, গম, ভুট্টা, খেসারির ভুসি। ঘাস খাওয়ানো হয় না, এতে গরুর মাংসে কোনো আঁশ থাকে না।
গরুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হয় না। অন্য গরুর চেয়ে দাম কিছুটা বেশি হলেও রাজধানী ঢাকার হাটগুলোতে প্রতিবছরই বিশেষ আকর্ষণ থাকে মিরকাদিমের গরুর। বিশেষ করে কোরবানিতে পুরান ঢাকার মানুষের প্রথম পছন্দ এই গরু।

 

মিরকাদিমে প্রস্তুত এসব গরু প্রধানত তোলা হয় রাজধানী ঢাকার গনি মিয়ার হাট বা রহমতগঞ্জ হাটে। এছাড়া কোরবানি উপলক্ষে আগে গ্রাহকদের আনাগোনাও দেখা যায় মিরকাদিমের খামারগুলোতে। পরিশ্রম অনুযায়ীয় লাভ হলে সময়ের সঙ্গে হারাতে বসা ঐতিহ্যবাহী এ গরু পালনের জৌলুসে আবারও ফিরে আসতে পারে বলে মনে করেন খামারিরা।

তবে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোনো কোনো খামারি লাভ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ইমন শেখ নামের এক খামারি বলেন, ‘সব উৎকৃষ্ট খাবার খাওয়ানো হয়। কোন ভেজাল খাওয়াই না আমরা। ভালো খাবারের দাম বেশি পড়ে। বাপ-দাদার আমল থেকে এই গরু পালনে জড়িত আমাদের পরিবার। বর্তমানে খাবার দাম বাড়ায় আমাদের গরু পালতে বেশি খরচ হচ্ছে। আমার খামারে ৭০টি গরু আছে। যদি এ বছর লাভ হয় তবে আগামীতে বাড়াব। লোকসান হলে অন্য গরু পালব।’

মিরকাদিম এগ্রো নামের গরুর খামারের মালিক বিল্লাল হোসেন জানান, গত বছর লোকশান গুনতে হয়েছে। এবারও করোনার প্রভাব বেশি। গো-খাদ্যের যে দাম এতে গরু লালনপালন শেষে কিছুই থাকছে না। এর ওপর ভারত থেকে গরু আসলে আমাদের লোকশান গুনতে হবে।’

আরেক খামারি আবির ব্যাপারী বলেন, ‘একেকটি গরু ৮-১০ মাস লালনপালন করে থাকি। প্রতিটি গরু পরিবারের সদস্যদের মত যত্ন নিয়ে লালনপালন করা হয়। এরপর যদি হাটে ভালো দাম না পাওয়া যায় তবে একদিকে যেমন লোকসান অন্যদিকে কষ্টও লাগে খুব।’

আরেক খামারি মেহেদি হাসান রাকিব বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। আমরা দু-একদিনে মধ্যে হাটে গরু তুলব। বেশিরভাগ গরু ঢাকার রহমতগঞ্জে তোলা হবে। কারণ আমাদের ৯৫ ভাগ ক্রেতাই সেখানে। তবে একদিকে খাবারের দাম বেশি, আরেকদিকে করোনা সব মিলিয়ে লাভ-লোকসান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আশা তো করি ভালো দাম পাব।’

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র জানান, ধবল গরুর সুখ্যাতি পুরো বাংলাদেশের রয়েছে। মিরকাদিমের খামারিদের গরু লালন পালনের জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা আর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। অনেক খামারি পরামর্শ অনুযায়ী গুরু পালন করেছেন। এবছর খামারের সংখ্যাও বেড়েছে।

নদী বন্দর / এমকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com