চলতি মৌসুমে মাগুরা জেলায় কলার ফলন ভালো হয়েছে। চলতি মৌসুমে মাগুরায় কলা চাষ হয়েছে ৮৮২ হেক্টর জমিতে। শ্রীপুর, শালিখা, মহম্মদপুর থেকে মাগুরা সদর উপজেলায় কলার চাষ বেশি হয়েছে। প্রথমদিকে ভালো দাম পেলেও সাম্প্রতিক কঠোর লকডাউন শুরুর পর থেকে কলার দাম কমে যাওয়ায় লোকসান গুনেছেন চাষিরা।
মাগুরার ওয়াবদা এলাকায় কলার বড় আড়ত থাকলেও কলা এবং ব্যবসায়ীরা না আসায় বেচা-বিক্রি কমে গেছে। কলা চাষিরা বলছেন একটি বছর চাষ করার পর দাম ভালো না থাকায় চাষিরা অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কঠোর লকডাউনে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলেও ব্যবসায়ী না থাকায় কলা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
ওয়াবদা কলার আড়তে যেখানে প্রতিদিন ছোট থেকে বড় ট্রাক ২০ থেকে ২৫টি লোড হত সেখানে বিগত লকডাউনের কারণে শূন্যের কোঠায় গিয়েছিল। বড় বড় ব্যবসায়ীরাও আসতে পারেননি। কলা বেচা বিক্রি কমে গেছে।
এক কাদি চাপা কলা (স্থানীয় নাম ঘাউর) ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সবরি কলার কাদি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সাগর ও রঙ্গিন মেহের সাগর কলা কাদি পাইকারি বিক্রি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। সেখানে প্রতি কাদি কলা ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় নেমে এসেছিল।
মাগুরা ওয়াবদা কলার আড়তে জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কলা নিয়ে আসেন ব্যাপারিরা। বিশেষ করে বেলনগর, কছুন্দি, ঘাসিয়াড়া, শ্রীপুর বারইপাড়া, রাধানগর, মাঝাইল মানন্দার তলা, রাজধরপুর, মহম্মদপুর, শালিখা থেকে আসা কলা এই আড়তে বিক্রয় হয়।
ওয়াবদা কলার আড়তে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, বগুড়া, বরিশাল, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন কলা কিনতে। এতদিন লকডাউনের কারণে জেলার হাট বাজারে লোক সমাগম কম থাকায় ব্যবসায়ীরা আসেনি। সে কারণে আড়তে বেচা বিক্রি কমে গেছে। ভালো দাম থেকে বঞ্চিত হয়েছেন চাষিরা। এখন আবার জমে উঠবে বেচা-কেনা।
মাগুরা সদর উপজেলার কছুন্দি ইউনিয়নের হুলিনগর গ্রামের কলা চাষি সোহরাব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, সংসারে অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পেতে কলা চাষ করেছি। কিন্তু এ বছর করোনা মহামারি ও কঠোর লকডাউনের কারণে কলার ভালো দাম না থাকায় লোকসান গুনতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমার দেখা দেখি এই এলাকায় বেশ কয়েকজন কলা চাষে ঝুঁকেছেন।
স্থানীয় পাইকারী ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, মাগুরা জেলার মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। সারাদেশে এই জেলার কলার সুনাম রয়েছে। মাগুরা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিদিন কলা আসলেও কঠোর লকডাউন থাকায় এতদিন ক্রেতারা আসেননি। তবে এখন আশা করছি সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জাগো নিউজকে বলেন, জেলায় চলতি বছর কলার উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে বিগতদিনের কঠোর লকডাউনের কারণে বাইরের জেলা থেকে কলা ব্যবসায়ীরা না আসায় লোকসানে পড়েছেন চাষিরা।
তাছাড়া আমরা মাঝে-মধ্যে কলা চাষিদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। তবে আমি মনে করি লকডাউন এখন শেষ হয়েছে। এখন কলা চাষিরা ভালো দাম পাবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেন এ কৃষি কর্মকর্তা।
নদী বন্দর / পিকে