বন্যার পানির স্রোতে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ধসে পড়ে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাইনখাড়া এলাকায় পাশাপাশি দুটি ব্রিজের অ্যাপ্রোচ (সংযোগ সড়ক)। এরমধ্যে একটি ব্রিজ হাসাইল-কামারখাড়া ও অপরটি কামাড়াখাড়া-আধাবাড়ি এলাকাবাসীর যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। তবে অ্যাপ্রোচ ধসের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এটি সংস্কার করা হয়নি। এতে উপজেলার হাসাইল-বানারী ও কামারখাড়া ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের মানুষের প্রধান চলাচলের দুটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
একটি ব্রিজের একপাশে জিও ব্যাগ ফেলে কোনো রকমের চলাচলের ব্যবস্থা করা হলেও অপর প্রান্তে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকোতে চেপে। ফলে দৈনন্দিন চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাইনখাড়া, নশংকর, কামারখাড়া, ভাঙ্গনিয়া, আদাবড়ি, বরাইল, চৌসার, ভিটিমালধাসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয় হাসাইল-কামারখাড়া সড়কের বাইনখাড়া এলাকার পাশাপাশি দুটি ব্রিজ দিয়ে।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, কামারখাড়া-হাসাইল সংযোগ সড়কের ব্রিজের দুই পাশের অ্যাপ্রোচে কোনো রকমে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ব্রিজে ওঠার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে কোনো যানবাহন যাতায়াতের অবস্থায় নেই ব্রিজটি। গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে সেতু পার হয়ে আবার অপর প্রান্ত থেকে গাড়ি নিয়ে ভেঙে ভেঙে যাতায়াত করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
অন্যদিকে কামারখাড়া-আদাবাড়ি সংযোগ সড়কের ওপর নির্মিত ব্রিজটি দিয়ে যাতায়াতের অবস্থা আরও খারাপ। ব্রিজটির একপাশে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও অপর পাশে চলাচলের ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো। কিশোর-যুবকরা সাঁকো দিয়ে কোনো রকমে চলাচল করতে পারলেও বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষদের ব্রিজটিতে ওঠার উপায় নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবু হালদার বলেন, গতবছর বন্যায় ব্রিজে ওঠার রাস্তা ভেঙে গেছে। তবে এখনও ঠিক করে দেওয়া হয়নি। কোনো গাড়ি চলে না, একপাশে নেবে পায়ে হেঁটে অপর পাশে যেতে হয়। ভোগান্তির পাশাপাশি আমাদের গাড়ি ভাড়াও বেশি লাগছে। জরুরি ভিত্তিতে সংযোগ সড়ক ঠিক করে দেয়া দরকার।
নাসিমা নামের এক নারী বলেন, বাঁশের সাঁকো দিয়া চলাচলে খুব সমস্যা হয়। কেননা গ্রামে অসুস্থ মানুষ আছে, বৃদ্ধ মানুষ আছে। তাদের এই ব্রিজ দিয়ে চলাচলে অনেক কষ্ট হয়।
আরেক বাসিন্দা আব্দুল নুর বলেন, এক বছর ধরে আমরা ২০-২৫ গ্রামের মানুষ এই সমস্যায় ভুগছি। আমাগো একটাই দাবি, তাড়াতাড়ি যেন ব্রিজের রাস্তা ঠিক করে দেওয়া হয়।
কামারখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মহিউদিন হালদার বলেন, সংযোগ সড়কটি ধসে পড়ায় র্দীঘদিন ধরে জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে। বিষয়টি বারবার উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয়কে জানানো হয়েছে। তারা পদক্ষেপ নিলে সমস্যা নিরসন হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টঙ্গিবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে হাসাইল থেকে কামারকাড়া পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও উন্নয়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এটি শেষ হলে ব্রিজের সংস্কার কাজ শুরু হবে।
নদী বন্দর / বিএফ