সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় ক্ষেতেই পচছে ধানের খড়। একদিকে গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি অন্য দিকে জমিতেই পচছে ধানের খড়। সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক ও গো-খামারিরা।
গো-খামারি ও গো-খাদ্য ব্যবসায়ীরা জানান, গত দু’মাস আগেও ফিড প্রতি বস্তা ৬৫০ থেকে ৭৫০, গমের ভুষি প্রতি বস্তা ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, ছোলার ভুষি প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, ধানের কুড়া প্রতি কেজি ৮ থেকে ১০ টাকা, চালের খুদ প্রতি কেজি ২৫ থেকে ২৮ টাকা, সরিষার খৈল প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এবং লবণ প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকা ছিল কিন্তু বর্তমানে ফিড প্রতি বস্তা ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা, গমের ভুসি ১ হাজার ৮৫০ থেকে ২ হাজার ২০ টাকা, ছোলার ভুষি প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ধানের কুড়া প্রতি কেজি ১৫ থেকে ১৮ টাকা, চালের খুদ প্রতি কেজি ২৫ থেকে ২৮ টাকা, সরিষার খৈল প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং লবণ প্রতি কেজি ১৩ থেকে ১৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার নান্দিনা কামালিয়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, আমার জমির ধান কাটতে না কাটতেই টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতে পানি জমে সব খড় পচে গেছে। এদিকে কৃষি শ্রমিকের যে মূল্য সে হারে ধান বিক্রি করে আমরা খুব একটা লাভের মুখ দেখি না। ধানের পাশাপাশি খড় বিক্রি করতে পারলে কিছুটা লাভ হয়। কিন্তু এবছর টানা বৃষ্টিতে খড় পচে বেশ ক্ষতি হয়ে গেছে।
উপজেলার ঠাঁকুরঝিপাড়া গ্রামের গো-খামারি জুলফিকার আকন্দ জানান, বর্তমানে আমার খামারে গাভীসহ ছয়টি গরু আছে। যেভাবে দিন দিন গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে হারে আমরা গরু পালন করে লাভবান হতে পারবো না। দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি গরুকে খড় খাওয়ালে উৎপাদন খরচ কিছুটা কম হয়। কিন্তু এবছর জমিতেই কৃষকের অনেক খড় পচে গেছে। ধারণা করছি এবছর খড়ের দামও বাড়বে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে গরু পালন সম্ভব হবে না।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের উপ-সহকারী প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা (প্রাণিস্বাস্থ্য) গোলাম হোসেন জানান, গো-খাদ্যের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা বিপাকে পড়েছেন। খামারিরা ঘাস আবাদ করলে দানাদার খাদ্যের পরিমাণ কম লাগবে। এতে তাদের উৎপাদন খরচ কমবে ফলে খামারি লাভবান হবেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবছর ৬ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে।
অন্যদিকে প্রাণীসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা ৪৯টি ও অনিবন্ধিত ২ হাজার ৯৪০টি। পাশাপাশি দুধ উৎপাদন হচ্ছে প্রতি বছরে ৩৮ হাজার মেট্রিক টন এবং মাংস ১৮ হাজার মেট্রিক টন।
নদী বন্দর/এসএফ