দেশে প্রতিনিয়ত বাতাসের সঙ্গে সিসার পরিমাণ বাড়ছে। ইউজলেস অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং (অব্যবহৃত এসিড ব্যাটারি) কারখানা থেকে সর্বোাচ্চ হারে বাতাসে সিসা ছড়াচ্ছে। এতে মানুষ নানা ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এটি টাঙ্গাইল, খুলনা, সিলেট ও পটুয়াখালীতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে আইসিডিডিআর,বি’র এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
বুধবার পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অব্যবহৃত অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানাগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে শ্রমিকরা কাজ করছেন। এসব কারখানার বর্জ্য থেকে বাতাসে সিসা ছড়াচ্ছে। যেসব জেলায় এসব কারখানা স্থাপন করা হয়েছে সেখানে সিসার পরিমাণ অনেক বেশি। সেসব জেলার গর্ভবর্তী মহিলা ও শিশুদের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের শরীরে সিসার পরিমাণ অধিক হারে শনাক্ত হয়েছে।
গবেষকরা জানান, অ্যাসিড ব্যাটারি কারখানাগুলো বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো ধরনের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। তারা শ্রমিকদের বেশি মজুরিতে কাজ করাচ্ছেন। নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় অনেকে সেখানে কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। যারা দীর্ঘদিন এসব কারখানায় কাজ করছেন তাদের শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতাসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এসময় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. সোহরাব আলী বলেন, সিসার বিস্তার আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে। এটি প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটারি কারখানাগুলো চিহ্নিত করে বন্ধ করে দিলেও তারা রিমোট এলাকায় গিয়ে আবারো কারখানা গড়ে তুলছে। সে কারণে তাদের দমন করা যাচ্ছে না। সেসবের মালিক-শ্রমিকরা সিসার ভয়াবহতা জানেন না। সেখানে যেসব বর্জ্য তৈরি হচ্ছে তা কীভাবে নিষ্কাশন করা দরকার তাও তারা জানেন না।
তিনি বলেন, ব্যাটারি কারখানা একেবারে বন্ধ করা সম্ভব হবে না। সেজন্য পরিবেশকে বাঁচাতে তাদের জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া জরুরি। সেটি অনুসরণ করে কাজ করলে পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পিউর আর্থের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মাহফুজুর রহমান, আইসিডিডিআরবি’র গবেষক ড. সাবরিনা রশিদ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের গবেষক ড. চন্দ্রসেগারার সলোমন প্রমুখ।
নদী বন্দর/এসএফ