ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে বাসের যাত্রীরা ট্রাক ও পিকআপ এর ছাদে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। এতে তাদের গুনতে হচ্ছে কয়েকগুন বেশি ভাড়া। বৃহস্পতিবার থেকে শিল্প কারখানাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে যাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে। যাত্রীর পাশাপাশি যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মহাসড়কটিতে যানবাহনের চাপ থাকলেও যানজট নেই।
২৬ জুন পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় ব্যস্ততম এই মহাসড়কের চিরাচরিত দৃশ্য কিছুটা বদলে গেছে। তবে যানবাহনে উঠতে না পেরে মির্জাপুরের গোড়াই শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের ঘন্টার পর ঘন্টা মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে দেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের প্রায় ২৬টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। ফেরি পারাপারে দীর্ঘ দূর্ভোগের কারনে ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার শত শত যানবাহন এ মহাসড়ক হয়ে চলাচল করে। গত ২৬ জুন থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় তাদের রাস্তা পরিবর্তন করেছে। এ কারণে এই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল কিছুটা কমেছে।
তবে মহাসড়কে দুরপাল্লার যানবাহনের পাশাপাশি মোটরসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও বিদ্যুৎ চালিত রিকশা যাত্রী নিয়ে মহাসড়কে চলাচল করছে। যাত্রীরা ঘন্টার পর ঘন্টা বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থেকে বাস না পেয়ে ট্রাক ও পিকআপ এর ছাঁদে বাড়ি যাচ্ছেন। এতে তাদের কয়েকগুন বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন এ উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চল এলাকার বিভিন্ন কারখানার অধিকাংশ নারী শ্রমিক। আবার অনেকেই সম্মিলিতভাবে বাস ভাড়া করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই বাসের জন্য মহাসড়কের বিভিন্ন স্টেশনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে আছেন।
শুক্রবার সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত ঢাকার দিকে চন্দ্রা এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট এক পর্যায় প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
এছাড়া গোড়াই নাজির পাড়া এলাকার চেয়ারম্যান বাড়ি ও গোড়াই স্টেশনে স্থানীয় কয়েকজন যুবক ট্রাক ও পিকআপ এ যাত্রী তুলে দিচ্ছেন। এজন্য তারা যাত্রী প্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা রেখে দিচ্ছেন। ওইসব যুবকদের টাকা দেওয়া না হলে গাড়িতে যাত্রী উঠতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কয়েকজনের সাথে কথা বললেও তারা তাদের নাম বলেননি। তারা বলেন, আমরা কষ্ট করছি পাশাপাশি মানুষের উপকার করছি। এজন্য কিছু টাকা পেতেই পারি।
কালিয়াকৈর উপজেলার ভোটঘর এলাকার এন্ডি কংক্রিট ট্রেডস এর শ্রমিক মিজানুর রহমান, সোহেল মিয়া ও মমিন মিয়া জানান, তারা পাঁচজন গোবিন্দগঞ্জ যাবেন। বাসে উঠতে পারছি না। ট্রাকে প্রতিজন ৫০০ টাকা করে ভাড়া চাচ্ছেন। বেতনের একটি বড় অংশ বাড়ি যেতে গাড়ি ভাড়া দিতে হবে। তাও আবার সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি।
নারী শ্রমিক খুরশিদা বেগম, রাশেদা আক্তার, রোজিনা আক্তার জানান, বাস না পেয়ে পিকআপ এর ছাঁদে সিরাজগঞ্জ বাড়ি যাচ্ছি। তাও আবার ১০০ টাকার ভাড়া ৩৫০ টাকা দিতে হচ্ছে।
ট্রাকের এক মালিক মেহেলারুল জানান, একজন পুরুষ ও চারজন নারী যাত্রীকে ২ হাজার ৫০০ টাকা ভাড়ায় ছাদে তুলেছি। তারা সকলেই গাইবান্ধা যযাবেন।
মির্জাপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধা থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। থেমে থেমে যানবাহনের গতি কমলেও যানজট নেই। ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
নদী বন্দর/এসএফ