ধু ধু মাঠ। পানি নেই। ঘাসে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ। আর তা গরু-ছাগলের চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে।
সকাল হলেই বিভিন্ন গ্রামের মানুষ দলে দলে গরু-ছাগল নিয়ে মাঠে চলে আসেন। রোপা আমন চাষাবাদের এই ভরা মৌসুমে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় বিলাশবাড়ী ইউপির হলুদ বিহার বারফালা মাঠে। মাঠ ফেটে চৌচির। পানির জন্য হাহাকার। গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে অনাবৃষ্টিতে শুকনো ফসলের মাঠ। পলি ও দো-আঁশ মাটিতে আবৃত বদলগাছী সবজি চাষের ভাণ্ডার হিসাবে পরিচিত। প্রকৃতির উত্তাপে যেন পুড়ছে প্রতিটি ফসল।
এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠে মাঠে যেমন রোপা আমন চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না, তেমনি পানি সংকটে ডোবা-নালা শুকিয়ে যাওয়ায় পাট কেটে জাগ দিতে পারছেন না কৃষকরা। অনেক পাটক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রায় অর্ধশতাধিক পাটচাষির সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, পাট কেটে আগাম ধান, তারপর সে জমিতে আগাম জাতের আলুসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু তীব্র দাবদাহের কারণে কৃষকের সব আশা যেন দূরাশায় পরিণত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান আলী জানান, এ বছর উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু পানি সংকটে কৃষকরা ধান রোপন করতে পারছেন না। তারা দু’-একটি গভীর নলকূপ চালু করে সেচের মাধ্যমে আমন ধানের চাষাবাদ শুরু করেছেন। অপরদিকে, এই উপজেলায় ১৪শ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। খরার কবলে বিপাকে পড়েছেন পাটচাষিরা। রাস্তার পাশে ড্রেন, ডোবা-নালা সব শুকিয়ে ওঠায় কৃষকরা পাট কেটে জাগ দিতে পারছেন না।
বদলগাছী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুর রহমান বলেন, বদলগাছীসহ আশপাশের এলাকায় গত সোমবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে দু’-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।
নদী বন্দর/এবি