ইউরোপে আগামী কয়েক শীতে গ্যাসের সংকট থাকতে পারে। শেলের প্রধান নির্বাহী বেন ভ্যান বুরডেন নরওয়েতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। ফলে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশেই ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। খবর বিবিসি, আল জাজিরার।
ভ্যান বুরডেন বলেন, এই সমস্যার সমাধানে আমাদের হয়তো কয়েকটি শীতকাল পার হয়ে যেতে পারে। এদিকে বেলজিয়ামের জ্বালানিমন্ত্রী তিনে ভ্যান ডের স্ট্রেটেন সতর্ক করেছেন যে, প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম না কমলে আগামী ৫ বা ১০টি শীতকাল ইউরোপের জন্য সংকটময় হতে পারে।
ইউক্রেনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান এমন দেশগুলো যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার তেল এবং গ্যাস আমদানি কমিয়ে দিয়েছে বা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ গত বছর ইউরোপে ৪০ শতাংশ গ্যাস সরবাহ করেছে রাশিয়া।
ভ্যান ডের স্ট্রেটেন এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, অবিলম্বে ইউরোপে গ্যাসের দাম কমানো জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আমরা যদি কিছু না করি তাহলে আগামী ৫ অথবা ১০টি শীতকাল আমাদের জন্য ভয়ানক হতে পারে। চলতি সপ্তাহে ইউরোপে বিদ্যুতের দামও বেড়ে গেছে।
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকটে পড়েছে ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ। ইউরোপীয়রা তাদের আয়ের এক-দশমাংশ জ্বালানিতে ব্যয় করছে। ধনী পরিবারগুলোতে বড় বাড়ি ও গাড়ি থাকার প্রবণতা থাকে, তবে জ্বালানির ব্যয় বৃদ্ধি সাধারণত আয়ের পার্থক্যের মতো বড় নয়। এজন্য গরিবদের জ্বালানি খরচ বাজেটের তুলনায় বেড়ে যাচ্ছে। দেশগুলোর মধ্যেও এ ধরনের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। যেমন- ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের সাবেক দরিদ্র কমিউনিস্ট দেশগুলো সমৃদ্ধ নর্ডিক উত্তরের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
তাছাড়া দেশগুলোর ঝুঁকিতে থাকার অন্যতম কারণ হলো প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে গ্যাসের পাইকারি মূল্য দ্বিগুণ হয়েছে। একসঙ্গে কয়লার দামও বেড়েছে। এদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে।
কিছু কিছু দেশ রয়েছে যেখানে জ্বালানির দামে খুব বেশি পরিবর্তন আনা হয় না। ওই অঞ্চলের অধিকাংশ দেশের জ্বালানি আসে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। ফলে যেসব দেশ মূলত প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
নদী বন্দর/এসএইচ