সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ১১ নম্বর চর বোয়ালকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু সিয়াম, সোলায়মান, আর্জিনা ও আলিফ। তাদের বাড়ি থেকে বের হতে একটু দেরি হলেই আর যাওয়া হয় না স্কুলে। নৌকা না পেলেই তাদের ক্লাস মিস হয়ে যায়। এমন ঘটনা যেন ওই বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর নিত্যদিনের সঙ্গী।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আহাম্মদ উল্লাহ জানান, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ২০৩ জন। এর মধ্যে ১০ শতাংশ রয়েছে টাঙ্গাইল জেলার ইছাপাশা এলাকার। তারা সবাই বোয়ালকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ছিল। ২০১৯ সালের দিকে বসতভিটা যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় তারা ওই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. শওকত বলেন, বোয়ালকান্দি অনেক বড় একটি গ্রাম ছিল। প্রতিবছর ভাঙতে ভাঙতে যমুনার পেটে সিংহভাগ অংশ চলে গেছে। যার কারণে নদীতে বিভিন্ন নালা সৃষ্টি হয়েছে। নালাতে পানি থাকায় শিক্ষার্থীদের নৌকায় করে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়।
আর এজন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন গুনতে হতো ১০ টাকা। এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল অনেক কম। পরে নৌকার মালিকের সঙ্গে কথা বলে প্রত্যেক মৌসুমে তাকে তিন হাজার টাকা দেওয়া হয়। আর শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন পাঁচ টাকা দেয়। এতে উপস্থিতি এখন বেশ ভালো।
নৌকার মাঝি শাহজাহান আলী বলেন, কোনাবাড়ী ঘাট থেকে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আনা-নেওয়া করি। মাঝে মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী বাসা থেকে বের হতে দেরি করলে নৌকা ধরতে পারে না। আর তাতেই অনেক শিক্ষার্থীর ক্লাস মিস হয়ে যায়।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, উপজেলার সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান যমুনার চরে অবস্থিত। যার ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নৌকায় পারাপার হতে হয়। আমরা এরই মধ্যে উপজেলার ১৬টি প্রতিষ্ঠানে নৌকা দিয়েছি। এই প্রতিষ্ঠানেও নৌকার ব্যবস্থা করা হবে।
নদী বন্দর/এসএইচ