পর্বতারোহীদের ব্যবহৃত অক্সিজেন বোতল, ছেড়া তাঁবু, দড়ি, ভাঙা মই, ক্যান আর প্লাস্টিকের মোড়ক, সবই আছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট এভারেস্টে। বরফে আবৃত সাদা শুভ্র এভারেস্ট তাই এখন যেন প্লাস্টিকেই আবৃত।
পর্বতারোহী আর ট্রেকাররা ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার উঁচু এ পর্বত আর আশপাশের এলাকাকে বানিয়েছে জঞ্জালের স্তূপে।
সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গকে দূষণমুক্ত করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন দর্শনার্থী তথ্যকেন্দ্র সাগারমাথা নেক্স সেন্টারের প্রধান টমি গুস্তাফসন। যেখানে স্থানীয় বাসিন্দা আর দেশি বিদেশি শিল্পীরা মাউন্ট এভারেস্টে ফেলে যাওয়া আর্বজনা পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করতে সহায়তা করবে।
তারা স্থানীয়দের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শেখাবেন কীভাবে আর্বজনা দিয়ে সুন্দর কিছু বানানো এবং প্রদর্শন করা যায়। এভারেস্টের কাছাকাছি একটি গ্যালারিতে প্রদর্শন করা হবে আবর্জনা দিয়ে তৈরি শিল্পকর্ম। এতে করে পর্বতকে আবর্জনার স্তূপ বানিয়ে ফেলা থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। আর এতে তরুণরাও হবে উৎসাহিত।
এই কেন্দ্রটি ৩ হাজার ৭৮০ মিটার উঁচুতে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের কাছেই অবস্থিত। লুকলা থেকে যেতে সময় লাগে ২ দিন। পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এ শিল্পকর্মগুলো প্রদর্শন এবং বিক্রি করা হবে, আবার উপহার হিসেবেও দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। পর্বত থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে তা আবার স্থানীয়দের কাছে পৌঁছানো এবং সর্বশেষ শিল্পকর্মগুলো আবার প্রদর্শন কেন্দ্রে নেওয়া সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন তারা। প্রতিকূল আবহাওয়া ও যোগাযোগব্যবস্থার কারণে তা আরও দুরূহ হতে পারে।
পর্বতের আশপাশে ফেলা আবর্জনা অনেক সময় সেখানেই পুড়িয়ে দিতে হয়, এতে বায়ু, মাটি, পানি দূষিত হয়।
সাগারমাথা নেক্সট প্রকল্পের ফিনজো শেরপা বলেন, ‘আমাকে বহন করে আনো’ এই উদ্যোগে প্রত্যেক গাইড এবং পর্যটককে অন্তত ১ কেজি করে আবর্জনা লুকলা বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়ে আসার অনুরোধ করা হবে। এখান থেকে আবর্জনা সহজেই কাঠমান্ডু নেওয়া হবে। সুরক্ষিত থাকবে সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের পরিবেশ।
২০১৯ সালে ৮০ হাজার ট্রেকার, পবর্তারোহী আর গাইড এভারেস্টে ভ্রমণ করেন। এভারেস্টের প্রথম আরোহী নিউজিল্যান্ডের স্যার অ্যাডমন্ড হিলারি ও নরওয়ের শেপরা তেনজিং। তারা ১৯৫৩ সালে মাউন্ট এভারেস্টে পা রাখেন। হিমালয় ডাটাবেজের তথ্য অনুযায়ী, এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার মানুষ ৬ হাজার ৫৫৩ বার নেপালের মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন।
নদী বন্দর / জিকে