রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস-এ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয়দানকারীর নেতৃত্বে একটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে, যার ফলে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাদের অভিযানের লক্ষ্য ছিল চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেবকে খুঁজে বের করা।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাত ৯টার দিকে মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয়দানকারী শেখ তারেক জামিল তাজের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় একটি বাসায় প্রবেশ করেন। তাজ নিজেকে ‘পল্লবী থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক’ হিসেবে পরিচয় দেন। অভিযানের সময়, শিক্ষার্থীরা বাসার মালিক ও স্থানীয় কমিটির সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং জোরপূর্বক বাসায় প্রবেশ করেন। তারা বাসার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং সাবেক এমপি মোতালেবকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।
তবে, এরআগে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) এক বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কেউ কোনও অভিযান চালাতে পারবে না।’ তার এই বক্তব্যের পরপরই ছাত্রদের তৎপরতা শুরু হওয়ায় সংশয় তৈরি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসার লোকজন জানায় যে মোতালেব ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এরপর, শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেন, কিন্তু সেখানে তারা তাকে পাননি। তাদের ধারণা, তারা পৌঁছানোর আগেই মোতালেব হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন।
বাসার ভিতরে বহিরাগতদের উপস্থিতি দেখে কেউ একজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রদের থামানোর চেষ্টা করে। পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন আহমেদ জানান, ‘আমি পৌঁছানোর আগেই তারা বাসায় ঢুকে পড়ে। বাসার মালিক বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায়। ছাত্ররা কাউকেই পায়নি, এরপর আমি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়ে ওসি স্যারের নির্দেশে তাদের চলে যেতে বলি।’
এদিকে, তাজ গণমাধ্যমে দাবি করেছেন, এটি কোনও অভিযান ছিল না এবং তারা পুলিশের অনুমতি নিয়েই সেখানে গিয়েছিলেন, যদিও পুলিশ তাদের পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
ছাত্রদের অভিযানের ঘটনার পর, প্রশ্ন উঠেছে— আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতি ছাড়াই তারা কীভাবে একটি অভিযান পরিচালনা করলো? স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যের পরই এমন ঘটনা ঘটায় জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, এ অভিযানের ঘটনায় আনুষ্ঠানিক কোনও তদন্ত শুরু হয়েছে কীনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নদীবন্দর/জেএস