দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা জানতে এবার প্রথমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে সিভিল সার্জন সম্মেলন। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোম ও মঙ্গলবার (১২ ও ১৩ মে) এই সম্মেলন রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে। কার্য অধিবেশন বসবে শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পাশে।
এ সম্মেলনে ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনরা অংশ নিচ্ছেন। এতে তারা নিজ নিজ জেলার স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ, অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ তুলে ধরবেন। এর ভিত্তিতে নীতিনির্ধারকদের কাছে স্বাস্থ্যসেবার কাঠামো উন্নয়নের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হবে।
সরকার সূত্র বলছে, ডিসি সম্মেলনের আদলে এই আয়োজন করা হয়েছে। প্রতি বছর ডিসিদের নিয়ে জাতীয় সম্মেলন হয়। এবার প্রথমবারের মতো জেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য প্রশাসকদের নিয়ে এমন আয়োজন করা হলো।
এর আগে, মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল—জেলার স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সমস্যাগুলো লিখিতভাবে জানাতে। সিভিল সার্জনরা সে অনুযায়ী তাদের মতামত পাঠিয়েছেন।
সম্মেলনে অংশ নেবেন স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ, স্থানীয় সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উপদেষ্টা, সচিব ও সিনিয়র কর্মকর্তারা।
প্রথম দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে দুজন সিভিল সার্জন জেলার স্বাস্থ্যচিত্র নিয়ে বক্তব্য রাখবেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মাঠপর্যায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে এ সম্মেলন। এতে করে জেলার হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্যসেবাকে আরও কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক করা সম্ভব হবে।
সূত্র জানিয়েছে, সম্মেলনে যেসব বিষয় প্রাধান্য পাবে তার মধ্যে রয়েছে— বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের করণীয়,
গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, টিকাদান কার্যক্রমের বিস্তার, চিকিৎসক ও নার্সের ঘাটতি, অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য পরিবহনসংক্রান্ত সমস্যা, হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি ও বাজেট বরাদ্দে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।
কয়েকজন সিভিল সার্জন তাদের জেলার নির্দিষ্ট চাহিদা ও সংকটের কথা আলাদাভাবে তুলে ধরেছেন। কেউ প্রস্তাব করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিয়োগ বাড়াতে। কেউ বলেছেন হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়ানো দরকার। কেউ আবার অ্যাম্বুলেন্স বা অবকাঠামোগত সমস্যার কথা বলেছেন।
নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে মাঠপর্যায়ের বাস্তব সমস্যা শুনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হলো।
নদীবন্দর/জেএস