1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ফিরে দেখা ১০ জুলাই: সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন - Nadibandar.com
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন
নদীবন্দর, ঢাকা
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫
  • ৩ বার পঠিত

গত বছরের এই দিনে (১০ জুলাই) সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে দেশ।

সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি না মানায় ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন শেষে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এক দফা দাবি আদায়ে পরের দিন ১১ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।

১০ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ১১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বাংলাদেশের সর্বত্র সড়ক ও রেলপথে শিক্ষার্থীরা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে আমরা কর্মসূচি শুরু করব এবং শিক্ষার্থীরা সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্লকেড কর্মসূচি সফলভাবে পালন করবেন।

১০ জুলাই সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি সারাদেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজধানীর জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি পয়েন্টে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয়ভাবে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করে। সেখান থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরির সব গ্রেডে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে কোটাব্যবস্থা যৌক্তিক সংস্কার করে আইন পাসের দাবি জানান।

এদিন সকাল ১০টার আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে লাইব্রেরি চত্বরে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা সেখান থেকে মিছিল করে কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শাহবাগসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন। শাহবাগে আসার পর আন্দোলনের সমন্বয়কদের নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে শাহবাগের আশেপাশের সড়কগুলো অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে শাহবাগ মোড়, কারওয়ান বাজার মোড়, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর, ফার্মগেট মোড়, শিক্ষা চত্বর, মৎস্য ভবন মোড়, চানখাঁরপুল মোড়, বঙ্গবাজার মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শেখ বোরহান উদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পাশাপাশি পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়। এক মাসের স্থিতাবস্থার রায়ের পর প্রধান বিচারপতি শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সংলগ্ন রেলপথ অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। প্রায় এক ঘণ্টা যাবৎ তাদের অবরোধের কারণে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশের সঙ্গে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একইসঙ্গে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, রিক্সা, ভ্যান ও মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যান চলাচলও বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। গুলিস্থান জিরো পয়েন্ট ও পল্টন মোড়ও অবরোধ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা সকাল ১০টা থেকে গুলিস্তানে নূর হোসেন চত্বর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন।

এছাড়া, রাজধানীর সায়েন্সল্যাব অবরোধ করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মহাখালী অংশের সড়ক অবরোধ করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রাজশাহী অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা। সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কসহ সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ময়মনসিংহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রংপুর মডার্ন মোড় অবরোধ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দেওয়ান হাটসহ চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজসমূহের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বরিশাল বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা।

কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বুধবার টানা চতুর্থ দিনের মতো ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র ধর্মঘট পালন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এদিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। মানুষের দুর্ভোগ হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

কোটা বাতিল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থার পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছেন। অর্থাৎ, যেমন আছে, তেমন থাকবে। কোটা বাতিল-সংক্রান্ত ২০১৮ সালের পরিপত্রের ভিত্তিতে যে সব সার্কুলার দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোটা থাকছে না। যারা আন্দোলন করছেন, তাদেরকে আমি অনুরোধ করব, যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট এটা বিবেচনায় নিয়েছেন, অতএব এখন (আন্দোলন করার) কোনো যৌক্তিক কারণ নাই। এটি বন্ধ করে তাদের ফিরে যাওয়া উচিত।’

নদীবন্দর/জেএস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com