আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে বিজিবিকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা আধুনিক যুগে প্রবেশ করেছি। বিজিবিও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে নজর দিয়েছে। দেশের সব জায়গায় এখন এই বাহিনীর বিচরণ আছে। বিজিবিকে শক্তিশালী করতে এরইমধ্যে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১’ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। এজন্য হেলিকপ্টার কেনা হয়েছে, উত্তমমানের জলযান নেয়া হচ্ছে। এছাড়া, ধাপে ধাপে আরও ১৫ হাজার জনবল নেয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীরউত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবির ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করে কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদানের মধ্য দিয়ে নবীন সৈনিককদের শপথ গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
তিনি বলেন, ‘যে কোন বাহিনীর একজন সৈনিকের মূল পরিচিতি হচ্ছে শৃঙ্খলা। বাংলাদেশ একটি আদর্শ নিয়েই স্বাধীন হয়েছে। সেই আদর্শ, আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের মধ্যে এসব গুণাবলীর প্রতিফলন সকলকে অনুপ্রাণিত ও মুগ্ধ করেছে। এসময়, জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হতে এবং বিজিবির মূলনীতির প্রতি নবীন সৈনিকদের গুরুত্ব আরোপের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আজকের দিনটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আজ থেকে ৪৬ বছর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিডিআরের তৃতীয় রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ করেছিলেন। কালের পরিক্রমায় মুজিব জন্মশতবর্ষে একইদিন ও ক্ষণে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত ও ধন্য মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫’র পর যেসব সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারা কেউই ভারতের সাথে বর্ডার গার্ডের সমস্যা সমাধানের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ৯৬ সালে আমি সরকারে আসার পর ওই সমস্যা সমাধান করি। উন্মুক্ত বর্ডারে নতুন কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছি এবং নতুন পোস্ট তৈরি করে বর্ডার সুরক্ষিত করেছি।
পরে, প্রধানমন্ত্রী নবীন সৈনিকদের নতুন জীবনে পদার্পনের শুভলগ্নে তাদের স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মহাপরিচালক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস রিক্রুট হিসেবে প্রথমস্থান অধিকারী রিক্রুট (জিডি) মো. খোকন মোল্লার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, বিজিবিএম (বার), এনডিসি, পিএসসি স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। এ সময় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সেনাবাহিনী ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত থেকে এ সমাপনী কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।
নদী বন্দর/এএম