জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সমুদ্রের পানি ক্রমশ উষ্ণ হচ্ছে এবং তাতে বাড়ছে সাইক্লোন বা অতিবৃষ্টির মতো দুর্যোগ। অসময়ের অতিবৃষ্টি পঙ্গপালের বংশবৃদ্ধি আচমকাই বাড়িয়ে দিচ্ছে। যা ছারখার করছে আশপাশের ক্ষেতের ফসল।
কেনিয়ার রুমুরুতি শহর এখন রাক্ষুসে পঙ্গপালের দখলে। খাবারের খোঁজে এরা দলবেঁধে বিস্তৃর্ণ মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে। নিমিষেই সাবাড় করছে সবুজ পাতা আর ক্ষেতের ফসল। যে অঞ্চলে পঙ্গপালের ঝাঁক আসছে, সেখানকার কৃষকরা ফসলের আশা ছেড়ে ঘরেই বসে থাকছেন।
তবে কৃষকদের এই দুর্দিনে পাশে দাঁড়িয়েছে স্টার্ট আপ কোম্পানি ‘দ্য বাগ পিকচার’। বিজ্ঞানীদের সহায়তায় কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে অভিনব উপায় বের করেছে তারা। ফলে কৃষকদের মলিন মুখেও দেখা মিলছে মৃদু হাসি।
অতি কষ্টের ফসল পঙ্গপালের পেটে যেতে দেখে শুধু শুধু হায় হায় না করে কৃষকরা পঙ্গপাল বিক্রি করে আয় করছেন। দ্য বাগ পিকচার এ সুযোগ করেছে। ক্ষেত থেকে পাঙ্গপাল ধরে তা বিক্রি করে আনন্দের সঙ্গে অর্থও পাচ্ছেন তারা।
পঙ্গপাল ধরে বস্তায় ভরে কৃষকরা বাগ পিকচারের কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। কেজিপ্রতি ৫০ কেনীয় শিলিং (০.৪৫৬ ডলার) পাচ্ছেন তারা। কৃষকদের কাছ থেকে কেনা পঙ্গপাল বস্তায় ভরে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে বাগ পিকচারের কর্মীরা।
বাগ পিকচারের কর্মীরা জানিয়েছেন, বস্তায় ভরে আনা রাক্ষুসে পঙ্গপাল প্রথমে ভালো করে শুকানো হচ্ছে। এরপর তা গুঁড়ো করা হচ্ছে। পরে পরীক্ষাগারে নেয়া হচ্ছে সেই গুঁড়ো।
তারা আরও বলছেন, প্রোটিনের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখার পর তা মানসম্মত হলে গুঁড়ো পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি ফসলের ক্ষেতে জৈবসার হিসেবেও দারুন কার্যকর।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পঙ্গপালের গুঁড়োয় প্রোটিনের মাত্রা যথেষ্টা। এই গুঁড়ো খাদ্য হিসেবে পশুকে খাওয়ালে যথেষ্ট প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিকে খাওয়ানো যাবে।
জৈবসার হিসেবে ফসলের ক্ষেতেও পঙ্গপালের গুঁড়ো ব্যবহার করা যাবে। ফসলের ক্ষেতে পঙ্গপালের গুঁড়ো ফলন বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা।
তথ্যসূত্র : ডয়েচে ভেলে
নদী বন্দর / পিকে