তিন মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সোমবার দেশটিতে নতুন করে এক হাজারের কম মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশটিতে ৭৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি দেশটিতে ৪ হাজার ৪৭৩ জনের মৃত্যু হয়। যা কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।
গত নভেম্বরে হাজারের নিচে মৃত্যু দেখা যায়নি। গত ২৯ নভেম্বর ৮২২ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা কমার ঘটনা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য ভালো খবর হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই দেশটিতে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই দেশটির ১০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ দেশটির প্রায় ৩ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে।
দেশটির সেন্টার্স ফর ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনসন (সিডিসি) জানিয়েছে, যারা ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন তারা একে অন্যের সঙ্গে মাস্ক ছাড়াই দেখা করতে পারবেন। অর্থাৎ ভ্যাকসিন নেয়ার পর মানুষের জীবন-যাপন এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
সিডিসির নতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেছেন তারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন বা নেননি এমন লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।
সিডিসি বলছে, ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ডোজ গ্রহণের দুই সপ্তাহ পর থেকেই লোকজনকে সুরক্ষিত বিবেচনা করা হয়। সোমবার হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের এক ব্রিফিংয়ে নতুন স্বাস্থ্য নির্দেশিকা ঘোষণা করেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
সেখানে জানানো হয়েছে যে, যারা ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন তারা অন্য ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে যে কোনো অভ্যন্তরীণ পরিবেশে মাস্ক ছাড়াই দেখা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্বও জরুরি নয়।
পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২৯ কোটি ৭৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫২ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬২৮ জন।
তবে ইতোমধ্যেই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ২০ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৬৩৪ জন। দেশটিতে করোনার অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৮৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯০। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে ১২ হাজার ৮৮২ জন।
করোনা মহামারির এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সংক্রমণ ও মৃত্যুতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্বের অনেক দেশই ইতোমধ্যেই ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করায় মহামারি থেকে নিস্তারের আশা জাগাচ্ছে। অচিরেই হয়তো আমরা মহামারি পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারব এমনটাই এখন সবার আশা।
নদী বন্দর / জিকে