উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ করায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় জেলেরা। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করছে এখানকার কয়েক হাজার জেলে পরিবার।
কর্মহীন হয়ে বাড়িতেই অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা। লাখ লাখ টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেক জেলে। অনেকেই পৈতৃক পেশা ছেড়ে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন।
এদিকে জেলেরা মাছ শিকার করতে না পারায় অলস সময় কাটছে আড়তদারদের। বন্ধ হয়ে গেছে মাছ ঘাটের হাঁকডাক। মহাজনরা জেলেদের লাখ লাখ টাকা দিয়ে অনেকটাই খালি হাতে বসে আছেন বলে সরেজমিন জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীকে জাটকা ইলিশ রক্ষা করার জন্য অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর এ অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। দীর্ঘ দুই মাস তেঁতুলিয়া নদীতে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় বিপাকে পড়েন স্থানীয় জেলেরা।
মহাজনের দাদনসহ লাখ লাখ টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে চিন্তিত তারা। দাদনের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে। কেউ আবার ক্ষণিকের জন্য পেশা বদল করে দিনমজুরসহ নানা পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন। দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস ধরে কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন বলে স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন।
সরকারি হিসাবে এ উপজেলায় মোট জেলের সংখ্যা ১০ হাজারের অধিক। কিন্তু বাস্তবে এর সংখ্যা আরও বেশি। বর্তমানে এসব জেলেদের সিংহভাগ কষ্টে ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সরেজমিন বুধবার দুপুরে উপজেলা সদরের গোলখালী গিয়ে স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা হয়।
স্থানীয় মিজান হাওলাদার ও আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন জেলে জানান, দীর্ঘ নয় মাস ধরে স্থানীয় জেলেরা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা বা চাল পাচ্ছেন না। ঋণের চাপে জেলেরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকেই পৈতৃক পেশা ছেড়ে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। তারা সরকারের কাছে ক্ষতি পূরণের দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, খুব দ্রুত জেলেদের মাঝে সরকারি চাল বিতরণ করা হবে।
নদী বন্দর / জিকে