ড্রেজার কেনা ও নদী খনন প্রক্রিয়া নিয়ে সংসদীয় কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অনেকগুলো ড্রেজার থাকার পরও মাওয়া-কাউরাকান্দি ঘাটে ফেরি চলাচল অনেক দিন কেন বন্ধ ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংসদীয় কমিটি।
রোববার (২১ মার্চ) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৩তম বৈঠকে কার্যবিবররণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকের বিবরণী থেকে জানা যায়, কমিটির সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষে (বিআইডব্লিউটিএ) প্রকল্পসমূহের কাজের ধরন হচ্ছে, ড্রেজিং মেশিন ক্রয় করা, ড্রেজিং করা এবং নদীর জায়গা উদ্ধারের পাশাপাশি নৌ-বন্দরকে সচল রাখা। নদীর সীমানা চিহ্নিত করার জন্য মন্ত্রণালয়কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
এ সময় বড় প্রকল্পসমূহ দুটি পর্যায়ে বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেন নূর-ই-আলম চৌধুরী। প্রথম পর্যায়ে জমি অধিগ্রহণ, মাটি ভরাট, সীমানা নির্ধারণ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন। এক্ষেত্রে প্রকল্পের সময়ও বৃদ্ধি পাবে না এবং সঠিক সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
তিনি বলেন, নাব্যতা সঙ্কটের কারণে মাওয়া-কাউরাকান্দি ঘাটে ফেরি চলাচল অনেক দিন বন্ধ ছিল। অনেকগুলো ড্রেজার থাকার পরেও রুটটি চালু রাখা সম্ভব হয়নি এবং বিগত ১ যুগে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তিনি বারবার একই ধরনের ড্রেজার ক্রয়ের কারণ এবং হপার ড্রেজার ক্রয়ের বিষয়ে জানতে চান।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, হপার ড্রেজার কেনার বিষয়টি বর্তমান টেন্ডার প্রক্রিয়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে ।
এরপর নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, পদ্মা এক্সপ্রেসওয়ে, রেলওয়ে, মেগাপ্রকল্পে অনেক বালুর প্রয়োজন হওয়া সত্ত্বেও ড্রেজিংয়ের বালু সরকারি প্রকল্পে সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি ড্রেজিংয়ের বালু প্রকল্পে সরবরাহের পরামর্শ দেন এবং এতে প্রকল্পের ব্যয় কম হবে মর্মে মত প্রকাশ করেন।
ড্রেজিং মেশিন ক্রয় সরকারের একটি বড় প্রকল্প উল্লেখ করে তিনি বলেন, ড্রেজার মেশিন কেনার ক্ষেত্রে বিআইডব্লিউটিএকে আরও সজাগ হতে হবে এবং এ ইউনিটকে শক্তিশালী করে বৃহৎ বন্দরগুলো মানুষের ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।
নদী খননে ড্রেজিংয়ের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে নকশা প্রণয়নের গুরুত্বারোপ করে নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, নদীর সম্মুখভাগ খনন না করে ভেতরের দিকে খনন করা হচ্ছে, ফলে নদী খননের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আড়িয়াল খাঁ নদী, ময়নাকাটা ছোট খালের ড্রেজিং নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সেই এঙ্গ ড্রেজিংয়ের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় কর্তৃক সঠিকভাবে কাজের তদারকি ও জবাবদিহিতার পরামর্শ দেন।
কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এবং আহসান আদেলুর রহমান অংশ নেন।
নদী বন্দর / জিকে