টসের সময়ই দেখা গিয়েছিল ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। দুই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও টিম সাউদিও বলেছিলেন বৃষ্টির কথা মাথায় রেখেছেন তারা। তবে যথাসময়েই শুরু হয়েছিল খেলা। কিন্তু ১৩তম ওভারে ফের বৃষ্টি নামলে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল ম্যাচ। প্রায় ২৫ মিনিট বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে খেলা। বৃষ্টির কারণে কোনো ওভার কাঁটা হয়নি।
নেপিয়ারে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস হেরে আগে বোলিং করেছিল বাংলাদেশ। সেদিন নিউজিল্যান্ড দাঁড় করিয়েছিল ২১০ রানের বিশাল সংগ্রহ। তবু আজ তাদেরকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে শুরু থেকে মারমুখী খেলতে থাকেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ফিন অ্যালেন। নাসুম আহমেদের করা প্রথম ওভারে দুই চারের মারে নিয়ে নেন ৯ রান, সাইফউদ্দিনের করা পরের ওভারে আসে আরও ৭ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভারে প্রথম বলে বাউন্ডারি হজম করেও ৪ রানের বেশি দেননি নাসুম।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিং পরিবর্তন করেন মাহমুদউল্লাহ। সাইফউদ্দিনের জায়গায় আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। তার প্রথম বলেই ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বিশাল ছক্কা মারেন অ্যালেন। ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেননি তাসকিন। সুযোগ তৈরি করেন পরের বলেই।
অতি আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টায় মিড অফ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন অ্যালেন। বলের নিচে গিয়েও সেটি তালুবন্দী করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। সেই ওভারের চতুর্থ বলে লংঅন দিয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ছক্কা মারেন গাপটিল। তবু দমে যাননি তাসকিন, আপোস করেননি গতি ও বাউন্সের সঙ্গে।
এর ফলও পান হাতেনাতে। তার ওভারের শেষ বলটিতেও ছক্কার জন্য বড় শট নেন অ্যালেন। কিন্তু টাইমিংয়ের গড়বড়ে সেটি উঠে যায় আকাশে। স্কয়ার লেগ থেকে অধিনায়কের করা ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেননি নাঈম শেখ। তার নিরাপদ হাতে বিদায়ঘণ্টা বাজে ১০ বলে ১৭ রান করা অ্যালেনের।
পরের ওভারে নাসুমকেও আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেন মাহমুদউল্লাহ, বল তুলে দেন আরেক তরুণ শরিফুল ইসলামের হাতে। দারুণ গতি ও বাউন্সের সঙ্গে দুর্দান্ত এক ওভার করেন শরিফুল। তবে কোনো বাউন্ডারি না পেলেও সেই ওভার থেকে ৭ রান তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড।
নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেলেও তাসকিনকে টানা দুই ওভার করাননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। ষষ্ঠ ওভারে ফের আক্রমণে আনেন সাইফউদ্দিনকে। প্রথম পাঁচ বলে জোড়া চার হজম করে ১২ রান দিয়ে বসেন সাইফউদ্দিন। কিন্তু শেষ বলে তাসকিনের দুর্দান্ত ক্যাচে ওভারটি শেষ হয় ভালোভাবে।
সাইফউদ্দিনের পায়ের ওপর করা ডেলিভারিটি জোরের সঙ্গে খেলেছিলেন গাপটিল। ব্যাটের ভেতরের দিকে লেগে বল চলে যায় ফাইন লেগে। সেখান থেকে বাম দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতেই বলটি তালুবন্দী করেন তাসকিন, সাজঘরে ফিরতে হয় ১৮ বলে ২১ রান করা গাপটিলকে।
প্রথম পাওয়ার প্লে’তে দুই উইকেট নেয়া বাংলাদেশ, স্বাগতিকদের ওপর আরও চাপ বাড়ায় ঠিক পরের বলেই। শরিফুলের করা ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে অনসাইডে বড় শটের চেষ্টা করেন আগের ম্যাচের নায়ক ডেভন কনওয়ে।
কিন্তু টপ এজ হয়ে বল চলে যায় সোজা স্কয়ার লেগে থাকা মিঠুনের হাতে। যার সুবাদে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম উইকেট পেয়ে যান শরিফুল।আগের ম্যাচে ৯৩ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলা কনওয়ে এবার ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি।
নিজের প্রথম ওভারে ৮ রান খরচ করেছিলেন শেখ মেহেদি হাসান। তিন ওভার বিরতি দিয়ে আবার ১২ নম্বর ওভারে তাকে আক্রমণে আনেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হজম করলেও চতুর্থ বলে সাজঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন রানের জন্য হাঁসফাঁশ করতে থাকা উইল ইয়ংকে।
মেহেদির করা প্রথম বলটিকে সোজা বোলারের মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান ইয়ং। পরের দুই বল থেকে কোনো রান করতে পারেননি তিনি। চতুর্থ বলে এগিয়ে এসে বড় শট খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন ইয়ং। বল চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে। ভুল করেননি লিটন,স্ট্যাম্পিং হয়ে ফিরে যান ইয়ং, মেহেদি পান নিজের প্রথম উইকেট।
অবশ্য সেই ওভারের শেষ বলে আবার ছক্কা হজম করেন মেহেদি। এবার তাকে এক্সট্রা কভার বাউন্ডারি দিয়ে উড়িয়ে মারেন গ্লেন ফিলিপস। এই ছক্কার মারে পূরণ হয় নিউজিল্যান্ডের দলীয় শতরান।
তবে পরের ওভারে শরিফুল ইসলাম দুই বল করার পরই বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। বৃষ্টিতে খেলা থামার আগে ১২.২ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১০২ রান, ১৭ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন গ্লেন ফিলিপস।
নদী বন্দর / পিকে