ভারতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে কুম্ভমেলায় করোনা সংক্রমণ এড়াতে ‘প্রতীকী কুম্ভমেলা’ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
গত তিনদিন ধরে দেশটিতে দৈনিক করোনা সংক্রমণ দুই লাখ ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিদিনই তা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯২ জন যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১৭ হাজার বেশি।
শনিবার এক টুইট বার্তায় মোদি বলেন, এবার করোনা মহামারির কথা মাথায় রেখেই প্রতীকী ভাবে কুম্ভমেলা পালন করা হোক।
তিনি আরও বলেন, জুনা আখড়ার স্বামী অবধেশানন্দ গিরিজির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। সাধুসন্তদের স্বাস্থ্যের খবর নিয়েছি। সকলেই প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মোদি।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, দু’টি শাহি স্নান ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে। করোনা সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে আমি অনুরোধ জানিয়েছি, আপাতত কুম্ভ প্রতীকী রূপেই উদ্যাপন করা হোক।
প্রধানমন্ত্রীর টুইটের পরই তার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে টুইট করেছেন স্বামী অবধেশানন্দ গিরিজি। তিনি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধকে সম্মান জানাচ্ছি। মানুষকে অনুরোধ করছি, কোভিড পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যায় শাহি স্নান করতে আসবেন না এবং কোভিডের বিধি-নিষেধ মেনে চলুন।
উল্লেখ্য, সংক্রমণের গতি রোধ করতে গণজমায়েতে বারবার রাশ টানার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এরকম মহামারি পরিস্থিতিতেই উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে চলছে কুম্ভমেলা। সেখানে বেশ কয়েকজন সন্ন্যাসীর দেহে কোভিডের লক্ষণ দেখা দিয়েছে। দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভারতে সুনামির মত আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৪৫ লাখ ২৬ হাজার ৬০৯। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১ হাজার ৩৪১ জন। যা শুক্রবারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫০ জন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৪ জন। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭৪০। এখন পর্যন্ত ভারতে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪১ জন। কিন্তু সংক্রমণ তবুও কমানো যাচ্ছে না।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রোববার উত্তরপ্রদেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে প্রথমবার মাস্ক ছাড়া ধরা পড়লে জরিমানা দিতে হবে এক হাজার টাকা এবং দ্বিতীয়বার মাস্ক ছাড়া ধরা পড়লেই এই জরিমানা বেড়ে দাঁড়াবে ১০ হাজার টাকা।
শুধুমাত্র জরুরি সেবা ছাড়া যাবতীয় সবকিছুই বন্ধ থাকবে। অপরদিকে মহারাষ্ট্রে ১৫ এপ্রিল থেকে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া দিল্লিতে এক সপ্তাহের কারফিউ জারি করা হয়েছে। শনি ও রোববার রাত ১০ থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত জারি থাকবে কারফিউ। পাশাপাশি বন্ধ থাকবে স্পা, জিম এবং শপিংমল।
নদী বন্দর / জিকে