1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
কারেন্ট পোকায় আর অতি তাপমাত্রায় নষ্ট বোরো ধান - Nadibandar.com
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৪৪ বার পঠিত

নাটোরের চলনবিলের কৃষকদের কষ্টের ফসল বোরো ধান ঘরে উঠতে বাকি আর এক সপ্তাহ। তবে এবার বছরের সবচেয়ে বড় আবাদ ঘরে তোলার সময়ে কৃষকরা চিন্তিত ধানের ফলন নিয়ে। কারেন্ট পোকার ও অতি তাপমাত্রায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধানের গাছ।

এ বছর নাটোরের সিংড়া ও গুরুদাসপুর উপজেলায় বিপুল পরিমাণে বোরো ধান আক্রান্ত হয়েছে কারেন্ট পোকার আক্রমণে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এ পোকা।

ধানের কচি ও পাকা উভয়প্রকার শীষই শুষে ফেলছে কারেন্ট পোকা। আক্রান্ত ক্ষেতের পাশ্ববর্তী কোনো ক্ষেত না থাকলে আক্রান্ত ধান গাছের গোড়াতেই লেপ্টে বংশবিস্তার করছে এ পোকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কাছে কারেন্ট পোকায় আক্রান্ত ধানের জমির পরিমাণ নিয়ে সঠিক তথ্য নেই।

jagonews24

কৃষকরা বলছেন, পাকা ও আঁধাপাকা ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সোনালি ও সবুজ শীষ ফ্যাকাশে ও সাদা বর্ণ ধারণ করছে। শেষ মুহূর্তে পাকা ধান বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে করছেন তারা। তবে এতে কোনো লাভ হচ্ছে না।

সম্প্রতি সিংড়া উপজেলার তাজপুর, চৌগ্রাম ও লালোর এবং গুরুদাসপুরের নাজিরপুর, চাপিলা ও ধারাবারিষা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কম-বেশি প্রত্যেকটি বোরো ধানের ক্ষেত কারেন্ট পোকায় আক্রান্ত। সবুজ ধানের ক্ষেতের মাঝামাঝি বৃত্তাকারে ফ্যাকাশে বর্ণ ধারণ করেছে ধান। ধানের আক্রান্ত ডগাজুড়ে অসংখ্য কালো দাগ। কচি অবস্থায় শীষ ও ডগার যেখানে কামড়েছে কারেন্ট পোকা, সেখানেই কালচে দাগ সৃষ্টি হয়েছে।

লালোর ইউনিয়নের ডাকমন্ডপ গ্রামের কৃষক ইয়াসিন আলী বলেন, ‘অনেক বছর পর ধানে পোকার আক্রমণ। ধানগুলো কাটার ঠিক আগ মুহূর্তে পোকার আক্রমণ আমাদের চিন্তিত করেছে’।

তাজপুর ইউনিয়ের রাখালগাছার কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার আট বিঘা জমির অর্ধেক ধানে পোকা লেগেছে। জমির যে প্রান্তে পোকার আক্রমণ, তার বিপরীত প্রান্ত থেকে ধান কাটা শুরু করেছি। আরো সাতদিন অপেক্ষা করলে ক্ষেত সাফ হয়ে যাবে’।

গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউনিয়নের বেরগঙ্গারামপুরের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, ‘এবার ধানের বাম্পার ফলন। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগও নাই। ভেবেছিলাম অনেক বেশি ধান গোলায় তুলবো। কিন্ত কারেন্ট পোকায় ধান কামড়ে সাদা করে দিচ্ছে’।’

তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দীন বলেন, ‘এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলেও শুধু কারেন্ট পোকার কারণে কৃষকের ফসলহানি শুরু হয়ে গেছে। কোনো কীটনাশক কাজে আসছে না। কৃষকরা অসহায় হয়ে পড়েছে’৷

তিনি আরো বলেন, ‘চলনবিলের সবচেয়ে বড় আবাদ পোকার কারণে কমলে আসন্ন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ জাতীয় মজুদে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে’।

jagonews24

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপফতরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার বলেন, ‘আগে চলনবিলে কারেন্ট পোকার আক্রমণ ছিল না। ধানক্ষেত থেকে পানি অপসারণ না হওয়ায় কারেন্ট পোকা বিস্তার লাভ করেছে। কৃষকরা বিচ্ছিন্নভাবে কীটনাশক প্রয়োগ করায় পোকা ধ্বংস হচ্ছে না। সমন্বিতভাবে একযোগে কীটনাশক প্রয়োগ করলেই কেবল এ পোকার আক্রমণ বন্ধ করা সম্ভব।

এদিকে দেশের সবচেয়ে উষ্ণ এলাকা লালপুর উপজেলায় অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে মাঠের পর মাঠ গোড়া শুকিয়ে বোরো ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ২৮, জিরা ৮১ ও ২৯ জাতের ধানে। ফসল বাঁচাতে অনেক কৃষক আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন।

বাকনাই গ্রামের কৃষক মহিউদ্দিন জানান, তার দুই বিঘা জমির জিরা জাতের ধানের শীষ দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই তিনি কাঁচা ধান কেটে গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন।

রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক মাজেদুল ইসলাম জানান, তার পাঁচ বিঘা জমির ২৮ জাতের ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। যতটা সম্ভব ধান কেটে ঘরে তুলছেন তিনি।

সালামপুর গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ধান প্রতিবছরই চিটা হয়। তবে এবার মাত্রাটা বেশি। ক্ষেতের চিটা ধানের নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা কৃষি অফিসে দিয়েছি প্রতিকার জানার জন্য’।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লালপুর উষ্ণ এলাকা হওয়ায় স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টিপাত এখানে অনেক কম। এছাড়া চলতি বছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে তেমন বৃষ্টি হয়নি। ফলে ধানের শীষ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চিটা থেকে ধান বাঁচাতে পরিমিত বৃষ্টিপাত বা অন্য উপায়ে ক্ষেতে পানি ধরে রাখতে রাখতে হবে। পাশাপাশি বিঘা প্রতি পাঁচ কেজি করে এমওপি (মিউরেট অফ পটাশ) সার প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যেতে পারে’।

নদী বন্দর / জিকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com