ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে জয়ের জন্য সেশন বাই সেশন খেলার দিকেই বেশি জোর দিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক। সেই মোতাবেক সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম সেশনটা বেশ ভালোভাবেই পার করেছে সফরকারী বাংলাদেশ।
পাল্লেকেলের উইকেটে সবুজ ঘাসের আধিক্য থাকলেও, টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান ডানহাতি ওপেনার সাইফ হাসান। তবে বিপদ আর বাড়তে দেননি তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ১ উইকেটে করেছে ১০৬ রান।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সুরঙ্গা লাকমলের প্রথম ওভারেই জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান তামিম ইকবাল। ওভারের তৃতীয় ও পঞ্চম বলে অনসাইড দিয়েই বাউন্ডারি দুইটি মারেন তিনি। কিন্তু বিশ্ব ফার্নান্দোর করার পরের ওভারে এর উল্টোটাই করেন সাইফ।
প্রথম পাঁচ বল ডট খেলার পর শেষ বলটি আঘাত হানে তার পায়ে। শ্রীলঙ্কানদের জোড়ালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। ম্যাচের প্রথম রিভিউ নিয়ে সাইফের বিদায় ঘণ্টা বাজান লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারাত্নে, শূন্য রানে ফিরতে হয় সাইফকে।
সঙ্গীকে হারালেও তামিম পরের ওভারে আবার হাঁকান বাউন্ডারি। এমনকি বিশ্বর ওভারেও তাকে খেলতে দেখা যায় সাবলীলভাবে। এই বাঁহাতি পেসারের করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে তিন চারের মারে ১৪ রান নেন তামিম। একইসঙ্গে ছুঁয়ে ফেলেন টেস্টে ৪৫৩৭ রান করা মুশফিককে।
বিশ্বর করা পরের ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়ে মুশফিককে ছাড়িয়ে যান তামিম। মুশফিকের সাতটি টেস্ট কম খেলেই এ রান করে ফেলেছেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম। রান তোলার গড়েও এগিয়ে তামিম। মুশফিক রান করেছেন ৩৬.৫৮ গড়ে, অন্যদিকে তামিমের রান এসেছে ৩৮-র বেশি গড়ে।
এদিকে শুরুতে উইকেট হারিয়ে খানিক চাপে পড়লেও, দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তা সামাল দিয়েছেন তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এরই মধ্যে গড়ে ফেলেছেন পঞ্চাশ রানের জুটি। লাহিরু কুমারার করা ইনিংসের ১২তম ওভারে ফের তিন চার হাঁকান তামিম। এই ওভারেই পূরণ হয় দলীয় পঞ্চাশ।
জুটি ভাঙতে না পেরে বোলিং আক্রমণে একের পর এক পরিবর্তন আনেন লঙ্কান অধিনায়ক। কিন্তু কিছুতেই কোনো কাজ হয়নি লঙ্কানদের। উল্টো যখনই রানের সুযোগ এসেছে তার পূর্ণ ফায়দা নিয়েছেন শান্ত ও তামিম। কখনও দেখে খেলেছেন, আবার কখনও আক্রমণাত্নক হয়ে তুলে নিয়েছেন বাউন্ডারি।
ইনিংসের ১৯তম ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেয়ার মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেটে নিজের ২৯তম ফিফটি পূরণ করেন তামিম। মুখোমুখি ৫২ বলে ১০ চারের মারে ব্যক্তিগত মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। অন্যপ্রান্তে ইনিংসের ২১তম ওভারে জোড়া হাঁকান শান্ত, তামিম একই কীর্তি দেখান পরের ওভারে।
দলীয় শতকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ২৪তম ওভার পর্যন্ত। এর আগে অবশ্য উইকেটের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ধনঞ্জয় ডি সিলভার নিজের তৃতীয় ও ইনিংসের ২৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট সাইড এজ হয়েছিল শান্তর। কিন্তু সেটি গ্লাভসে রাখতে পারেননি উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকভেলা।
পুরো সেশনে এই একটি বাদে আর কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। প্রথম সেশনের ২৭ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ১০৬ রান। দ্বিতীয় উইকেট জুটির সংগ্রহ ৯৮ রান। ফিফটি তুলে নিয়ে তামিম অপরাজিত রয়েছেন ৬৫ রানে, শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ৩৭ রান।
নদী বন্দর / এমকে