টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব আল হাসানকে ছাড়া খেলতে নেমে হারের মুখ দেখল কলকাতা নাইট রাইডার্স। এবার তাদের উড়িয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানের দল রাজস্থান রয়্যালস।
লক্ষ্য ছিল ১৩৪ রানের। অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এই লক্ষ্য ৬ উইকেট আর ৭ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে রাজস্থান। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা তলানি থেকে উঠে এসেছে ছয় নম্বরে।
রান তাড়ায় তেমন বেগ পেতে হয়নি রাজস্থানকে। জস বাটলার ৫ রানে ফেরার পর জস্বশী জাসওয়েল ১৭ বলে ২২ আর শিভাম দুবের ১৮ বলে ২২ রান করে আউট হলেও স্যামসনের ধরে খেলা ইনিংসে দেখেশুনে এগিয়েছে দলটি। ১০০ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ডেভিড মিলারকে নিয়ে বাকি পথ সহজেই পারি দিয়েছেন স্যামসন।
রাজস্থান অধিনায়কের ব্যাট থেকেই এসেছে জয়সূচক রানটি। ৪১ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ২৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৪ রান নিয়ে তার সঙ্গে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন মিলার।
এর আগে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মোস্তাফিজুর রহমানের মিতব্যয়ী বোলিং আর ক্রিস মরিসের উইকেট শিকারের উৎসবে রীতিমত দিশেহারা হয়ে পড়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ৯ উইকেটে ১৩৩ রানেই আটকে যায় দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা।
দারুণ বোলিং করেছেন টাইগার কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ। রাজস্থান টপঅর্ডারকে মূলত ভুগিয়েছেন তিনিই। শেষটা করেছেন মরিস। সবমিলিয়ে ব্যাটিংয়ে রীতিমত ঘাম ঝরেছে সাকিবকে ছাড়া খেলতে নামা কলকাতার।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই স্বস্তিতে ছিল না কলকাতা। প্রথম তিন ওভারে তারা তুলতে পারে ১৪ রান। চতুর্থ ওভারে মোস্তাফিজকে আক্রমণে নিয়ে আসেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন।
ওই ওভারে একটি বাউন্ডারিসহ ৭ রান দেন মোস্তাফিজ। এক ওভার পর মোস্তাফিজ আবার বল হাতে নেয়ার পরই বিপদে পড়ে কলকাতা। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম তিন বলে মাত্র এক রান দেন কাটার মাস্টার।
চাপের মুখে চতুর্থ বলটি শর্ট কভারে ঠেলেই সিঙ্গেলস নিতে চেয়েছিলেন শুভমান গিল। জস বাটলার সেই বল হাতে নিয়ে নিমিষেই ননস্ট্রাইক এন্ডের স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। ১৯ বলে ১১ রান করেন গিল। মোস্তাফিজের ওই ওভারে আসে মাত্র ২ রান।
এরপর নবম ওভারের প্রথম বলে ধীরগতিতে এগিয়ে চলা নীতিশ রানাকে (২৫ বলে ২২) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান চেতন সাকারিয়া। পরের ওভারে জয়দেব উনাদকাতের শিকার সাকিবের বদলে খেলা সুনিল নারিন (৭ বলে ৬)।
ইয়ন মরগ্যান তার অফফর্ম থেকে বের হতে পারেননি এই ম্যাচেও। শূন্য রানেই রানআউট হন কলকাতা অধিনায়ক। ৬১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দল। এরপর দিনেশ কার্তিক আর রাহুল ত্রিপাথি ৩৩ রানের একটি জুটি গড়েন।
থিতু সেই জুটিটি ভেঙেছেন দারুণ বোলিং করা মোস্তাফিজ। ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তার স্লোয়ার অফকাটারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দেন ত্রিপাথি (২৬ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ৩৬)। ওই ওভারে মোস্তাফিজ দেন ৫ রান।
১৮তম ওভারে এসে দুই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখান ক্রিস মরিস। আন্দ্রে রাসেল ৭ বলে ৯ আর দিনেশ কার্তিক ২৪ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে ফেরত যান। ১১৮ রানে ৭ উইকেট হারানো কলকাতা এরপর আর বড় সংগ্রহের পেছনে ছুটতে পারেনি।
১৯তম ওভারে এসে মোস্তাফিজ খরচ করেন ৯ রান। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে ২৩ রানে ১টি উইকেট নিয়েছেন কাটার মাস্টার। টি-টোয়েন্টির হিসেবে যেটি বেশ ভালো বোলিং।
তবে ইনিংসের শেষ ওভারে এসে আরও দুই উইকেট তুলে নিয়ে মরিস আলোটা নিজের দিকে নিয়ে গেছেন। ৪ ওভারে ২৪ রানে প্রোটিয়া এই অলরাউন্ডারের শিকার ৪ উইকেট।
নদী বন্দর / জিকে