গাছের সবুজ পাতার আড়ালে ধরে থাকা বাঙ্গি, তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়া যেন এক অপরূপ দৃশ্য ধারণ করেছে। মাঠের ফসল রক্ষায় পরিচর্যার ব্যস্ত কৃষকরা। ইতিমধ্যে কৃষকরা জমি থেকে উপযুক্ত সাথী ফসল তুলতে এবং বাজারজাতকরণ শুরু করেছেন।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা, চরকাদহ, শিধুলী, পাঁচশিশা, নাড়িবাড়ি, সোনাবাজু, হাজিরহাট, তালবাড়িয়া ও নয়াবাজার বিশ্বরোড সংলগ্ন সবুজ বিস্তীর্ণ মাঠের দিকে তাকালেই মিষ্টি কুমড়া, বাঙ্গি ও তরমুজের দেখা মিলে। শষ্য ভান্ডার খ্যাত এ অঞ্চলে গত কয়েক বছরের তুলনায় রসুনের সাথী ফসলের রেকর্ড পরিমাণ আবাদ হয়েছে।
প্রতিদিন অন্তত ৫০টি গাড়ি বাঙ্গি, তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়া লোড করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। গতবছর বিঘাপ্রতি ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করলেও এ বছর ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে এই সাথী ফসল। এখানকার বাঙ্গি ও তরমুজ ক্রয় করতে বাইরে থেকে আসছেন অনেক বেপারি।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর গুরুদাসপুরে বাঙ্গি ৭২০ হেক্টর, তরমুজ ৫৫৫ হেক্টর ও মিষ্টি কুমড়া ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। খরায় ফসলের ফলন ভালো হওয়ায় বাঙ্গিতে ২২ হাজার মেট্রিক টন, তরমুজ ২৩ হাজার মেট্রিক টন ও মিষ্টি কুমড়ায় ১৭৫ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে।
সোনাবাজু গ্রামের কৃষক মোতাহার ও বজলুর রশিদ জানান, রসুনের গাছ বড় হওয়ার পর গাছের ফাঁকে ফাঁকে বাঙ্গি, তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়ার বীজ লাগাতে হয়। এ ফসলের জন্য বাড়তি সার ও কীটনাশক লাগে না। এ বছর বাঙ্গি ও তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে।
বাঙ্গি তুলতে শ্রমিকদের ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি দিতে হচ্ছে। তবে রমজান মাসে বাজারে এসব ফলের চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাচ্ছি। তাতে রসুনের চাষে লোকসান হলেও এসব সাথী ফসলে আমরা লাভবান হচ্ছি।
বেপারিরা জানান, দেশজুড়ে এফসলের সুনাম থাকায় আমরা প্রতিবছরই এখানে আসি। কিন্তু এ বছর করোনা, লকডাউন ও গাড়ি ভাড়া বেশি হওয়ায় মাল কিনে পরতা হচ্ছে না। তবে রমজানে কারণে কিছুটা দাম পাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গুরুদাসপুরে এ বছর সাথী ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় আগামী বছরে কৃষকরা সাথী সফল আবাদে আগ্রহী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
নদী বন্দর / জিকে