1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
মাছ রোগাক্রান্ত হলে প্রতিকার করবেন যেভাবে - Nadibandar.com
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৩ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১
  • ১৫৮ বার পঠিত

মাছেরও বিভিন্ন রকম রোগ বালাই আছে। এসব রোগ মাছ চাষের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা। বছরে অনেক সময় মাছ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন কারণে উন্মুক্ত জলাশয়ের চেয়ে বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা মাছে রোগের প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। তাই পুকুর-দীঘির মাছ প্রায়ই নানা রোগের কবলে পড়ে।

আমাদের দেশে প্রায় ৩২ প্রজাতির মাছ ক্ষত রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মাছের গায়ে ক্ষতের সৃষ্টি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে মাছের গায়ে ছোট ছোট লাল দাগ দেখা যায়। লাল দাগের স্থানে গভীর ক্ষত হয়। মাছ দ্রুত মারা যায়। চোখ নষ্ট হতে পারে। ক্ষত স্থান থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। মাছ খাদ্য গ্রহণ করে না।

ক্ষতে চাপ দিলে দুর্গন্ধ ও পুঁজ বের হয়। মাছ দুর্বল হয় এবং ভারসাম্যহীনভাবে চলাফেরা করে। আক্রান্ত বেশি হলে লেজ ও পাখনা পচে খসে পড়ে।

দেশে সাধারণত শোল, গজার, টাকি, পুঁটি, বাইন, কৈ, মৃগেল, কার্পিও এবং পুকুরের তলায় বসবাসকারী অন্যান্য প্রজাতির মাছ ক্ষত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

jagonews24

মাছের ক্ষত রোগ সম্পর্কে মৎস্য চাষিরা কম-বেশি সবাই জানেন। এ রোগ সম্পর্কে ভালোভাবে জানার উপায় আক্রান্ত মাছের গায়ে ক্ষত বা ঘাজনিত লাল দাগ দেখা যায়। এই দাগের আকৃতি ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। ঘা মাছের লেজের গোড়া, পিঠ ও মুখের দিকেই বেশি হয়ে থাকে। এ রোগ দেখা মাত্র মাছ পুকুর থেকে দ্রুত তুলে ফেলতে হবে। ১০ লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম লবণ গুলে লবণমিশ্রিত পানিতে রোগাক্রান্ত মাছ পাঁচ থেকে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রেখে আবার পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।

ক্ষত রোগে আক্রমণের আগেই প্রতি বছর আশ্বিন মাসের শেষে কিংবা কার্তিক মাসের প্রথম দিকে পুকুরে শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে পাথুরে চুন ও এক কেজি হারে লবণ দিতে হবে। তাহলে সাধারণত আসন্ন শীত মৌসুমে ক্ষত রোগের কবল থেকে মাছ মুক্ত থাকবে।

মাছের পেট ফোলা রোগে সাধারণত রুই জাতীয় মাছ, শিং-মাগুর ও পাঙাশ মাছ বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। পেট ফোলা রোগাক্রান্ত মাছের দেহের রং ফ্যাকাশে হয়ে যায়। পেটে পানি জমার কারণে পেট ফুলে থাকে। মাছ ভারসাম্যহীনভাবে চলাফেরা করে।

বেশির ভাগ সময়ই পানির ওপর ভেসে ওঠে এবং খাবি খায়। আক্রান্ত মাছ খুব দ্রুত মারা যেতে পারে। প্রতিকার হিসেবে প্রতি শতাংশ জলাশয়ে ১ কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মাছের খাদ্যের সঙ্গে ফিশমিল ব্যবহার করা জরুরি। এছাড়া পুকুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনসহ মাছকে নিয়মিত সুষম খাদ্য প্রদান করতে হবে।

মাছের মধ্যে পাখনা ও লেজ পচা রোগে সাধারণত রুইজাতীয় মাছ, শিং-মাগুর ও পাঙাশ মাছ আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে পিঠের পাখনা এবং ক্রমান্বয়ে অন্যান্য পাখনাও আক্রান্ত হয়। কোনো কোনো মৎস্যবিজ্ঞানীর বলছেন, অ্যারোমোনাডস ও মিক্সোব্যাকটার গ্রুপের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এ রোগের সংক্রমণ ঘটে। পানির ক্ষার স্বল্পতা ও পিএইচ ঘাটতি দেখা দিলেও এ রোগের উৎপত্তি হতে পারে। এরোগ আক্রান্ত মাছ পুকুর থেকে তুলে ০.৫ পিপিএম পটাশযুক্ত পানিতে আক্রান্ত মাছকে ৩ থেকে ৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। পুকুরে সাময়িকভাবে সার দেয়া বন্ধ করতে হবে।

jagonews24

এছাড়া রোগজীবাণু ধ্বংসের পর মজুতকৃত মাছের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে হবে। এ অবস্থায় প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় মাছেরই উকুন রোগ দেখা দেয়। এরমধ্যে রুই মাছ, কখনো কখনো কাতল মাছও আক্রান্ত হয়ে থাকে। গ্রীষ্মকালে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এ রোগে মাছের সারা দেহে উকুন ছড়িয়ে দেহের রস শোষণ করে মাছকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।

এতে মাছ ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে মারা যেতে পারে। মাছের উকুন রোগের প্রতিকার করার জন্য শতকরা আড়াই ভাগ লবণ দ্রবণে কিছু সময় আক্রান্ত মাছ ডুবিয়ে রাখতে হবে। এতে করে উকুনগুলো নিস্তেজ হয়ে পড়বে। এ অস্থায় হাত কিংবা চিমটা দিয়ে উকুনগুলো মাছের শরীর থেকে তুলে ফেলতে হবে। অনেক সময় মাছের পুষ্টির অভাবজনিত রোগ দেখা দেয়।

এ রোগে পুকুরে চাষযোগ্য যে কোনো মাছই আক্রান্ত হতে পারে। ভিটামিন ‘এ ডি এবং কে’-এর অভাবে মাছ অন্ধত্ব এবং হাড় বাঁকা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। মাছের খাবারে আমিষের ঘাটতি দেখা দিলেও মাছের স্বাভাবিক বর্ধন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত হয়। অচিরেই মাছ নানা রোগের কবলে পড়ে।

মাছ এসব রোগে আক্রান্ত মাছকে খাবারের সঙ্গে প্রয়োজনীয় মাত্রায় সুনির্দিষ্ট ভিটামিন ও খনিজ লবণ মিশিয়ে খাওয়ানো হলে যথা শিগগিরই মাছের শারীরিক অবস্থার উন্নতি সম্ভব। মাছের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মাছ চাষ করে চাষকৃত পুকুরে মাছের রোগ প্রতিরোধ করা অনেকাংশেই সম্ভব।

 

নদী বন্দর / পিকে

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com