শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ কর আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে সচিবালয় অভিমুখে শুরু করে তারা। মিছিলটি শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট, প্রেস ক্লাব অতিক্রম করে সচিবালয় গেটে আসলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয়।
পুলিশের বাধায় পড়ে ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা সেখানেই শিক্ষা-ব্যবসা, একসাথে চলে না; হল-ক্যাম্পাস খুলে দাও, নাইলে গদি ছেড়ে দাও; করারোপ যেখানে, লড়াই হবে সেখানে; অচল হল সচল করো, শিক্ষা জীবন রক্ষা করো, ইত্যাদি স্লোগান দেয়। ছাত্রজোটের নেতারা তখন পুলিশের সামনেই বক্তব্য দিতে শুরু করেন।
বক্তব্যে ছাত্রজোটের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান করছি, শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার আবেদন করেছিলাম কিন্তু আমরা দেখলাম ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের দাবিতে কর্ণপাত করেননি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগও দেখতে পাচ্ছি না। রোডম্যাপও ঘোষণা করা হচ্ছে না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উপর ঠিকই ১৫% করারোপ করে। এ সরকার যে বর্বরতা, কর্মকাণ্ড করছে, আমাদের যৌক্তিক দাবিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। এতে করে এ সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্র স্পষ্ট। বাধা দিয়ে আমাদের আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। শিক্ষা খাতের এই চক্রান্ত এবং এই চক্রান্তের মূল ফ্যাসিবাদী সরকারকে রুখে দিতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘করোনার থাকা না থাকার প্রশ্ন শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করছে এ সরকার। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে শতাধিক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঘটনাসহ নানান সংকট তৈরি হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বারবার শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিচ্ছে অথচ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আপনি দায়িত্ব ছেড়ে আমাদের উপর দায়িত্ব দিন, আমরা ১৫ দিনের মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা করে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালা খুলে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম সচল করব।’
পুলিশি বাধার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয় বলেন, ‘আজকের সমাবেশ থেকে আমাদের যৌক্তিক দাবিতে পুলিশি বাধার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বাধা দিয়ে আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম বন্ধ করা যাবে না, ছাত্রসমাজের জন্য আমাদের আন্দোলন চলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা বাড়াবাড়ি করছেন, এই বাড়াবাড়ির ফল ভালো হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওই জং ধরা তালা আমাদের ভাঙতে হবে, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের চারটি দাবি মেনে নিন। অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন। অন্যথায় সারা দেশের ছাত্র সমাজকে নিয়ে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করব।’
নদী বন্দর / বিএফ