1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
নতুন ধরনের করোনার উৎস দক্ষিণ আফ্রিকায় - Nadibandar.com
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ১২৪ বার পঠিত

যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাজ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের দুজন আক্রান্ত হয়েছেন।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডন ও উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডে আক্রান্ত ওই দুই ব্যক্তি সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে এসেছেন, এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এ ঘটনার পর দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাজ্য। এছাড়া গত ১৪ দিনে যারা দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্রমণ করেছেন, কিংবা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদেরকে দ্রুত কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এরইমধ্যে ভাইরাসটি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোয়াইলি ম্যাখিজে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আগে যেসব তরুণ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন, তারাও এখন ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এইডস মহামারির শুরুর দিকে যে অবস্থা পার করেছি, সেই একই অবস্থা আবার পার করতে পারবো না।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এই বৈশিষ্ট্য বা ভ্যারিয়ান্টটি দ্রুত ছড়ায় এবং দেশটির অনেক এলাকায় এর সংক্রমণও বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। তবে এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এটি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটির সাথে এর আগে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন বৈশিষ্ট্যের আরেকটি ভাইরাসের কিছুটা মিল রয়েছে। যদিও এ ভাইরাস দুটি আলাদাভাবে বিবর্তিত হয়েছে। দুটি ভাইরাসেরই একটি নির্দিষ্ট অংশে এন ফাইভ জিরো ওয়ান ওয়াই (N501Y) নামে একটি পরিবর্তন হয়েছে। ওই অংশটি দিয়ে ভাইরাসগুলো মানবদেহের কোষকে আক্রান্ত করে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক নিল ফার্গুসন বলেন, ‘আমার মনে হয় এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি যে ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ থাকা উচিত সেটি হচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার ভাইরাসটি। এই ভাইরাসটি বিস্ফোরকের মতো সংক্রমণের বিস্ময়কর রিপোর্ট রয়েছে। আর এর সংক্রমণের সংখ্যাও অধিক হারে বাড়তে পারে।’

ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি খুবই উদ্বেগজনক। যাদের কোয়ারেন্টােইনে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তাদের অন্য যেকোনো ব্যক্তির সাথে সংস্পর্শ সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত।

ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা করেন, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনার পদক্ষেপ হিসেবে লাখ লাখ মানুষকে ক্রিসমাসের (বড় দিন) পরের দিন বা বক্সিং ডে থেকেই চতুর্থ পর্যায় বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিধি-নিষেধের আওতায় আনা হবে।

ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগের ডা. সুসান হপকিন্স বলেন, মনে হচ্ছে দুটি ভাইরাসই তারা অত্যন্ত সংক্রমণশীল। তারা এখনো দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে আসা ভাইরাসটির ধরন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। ভ্রমণে বিধি-নিষেধ আরোপের মাধ্যমে করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ সম্ভব বলে জানান তিনি।

ওয়ারউইক মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক লরেন্স ইয়াং বলেন, সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকাতে যে বিধি-নিষেধ (হাত, মুখ, অন্যান্য স্থান বিষয়ক) রয়েছে, তা করেনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়াও রোধ করবে। তাই দেশজুড়ে বিধি-নিষেধ আরও কঠোর করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে।

করোনার নতুন ধরন নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা কী ব্যবস্থা নিয়েছে সে ব্যাপারে বিবিসি নিউজের ফারুক চোথিয়া ব্যাখ্যা করে বলেন, উৎসবের মৌসুমেও সরকার বিধি-নিষেধ কঠোর করেছে। এর মধ্যে ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশের বিখ্যাত গার্ডেন রুট সৈকত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে দেশটির ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স নামে একটি বিরোধীদল এবং কয়েকটি লবি গ্রুপ। তারা আদালতে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দাবি করেছেন। তারা বলেছেন, সৈকত বন্ধ করে দেয়া হলে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। কিন্তু বিচারকরা সরকারি সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছেন এবং বলেছেন, সরকারের জনস্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়েস্টার্ন কেপের প্রিমিয়ার অ্যালান উইন্ডি বলেন, প্রদেশের হাসপাতালগুলো এরই মধ্যে মুশকিলে পড়েছে। করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় প্রদেশটিতে বর্তমানে বেশি কোভিড-১৯ রোগী রয়েছে।

এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট ৯৫ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। দেশটিতে এ ভাইরাসে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।

এর আগে যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (রূপান্তরিত রূপ) শনাক্তের জেরে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে দেশটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এই আতঙ্কের মধ্যেই সীমান্ত খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। ফলে দুই দেশের মধ্যে আবারও শুরু হচ্ছে রেল, আকাশ ও সমুদ্রপথে চলাচল।

নদী বন্দর / জিকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com