জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে উপকূলের কৃষি ব্যবস্থাপনা। এমন পরিস্থিতিতে একই জমি থেকে একাধিক বার ফসল উৎপাদন এবং জমির বহুবিদ ব্যবহারের কথা বলছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র।
দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের এ বিষয়ে সরাসরি ধারণা দিতে গবেষণা কেন্দ্রের আম বাগানে সাথী ফসল হিসেবে আনারস চাষ করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এ চাষপদ্বতি দেখে স্থানীয়রা আনারস চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র থেকে কারিগরি সহযোগিতার কথা জানান কৃষি বিজ্ঞানীরা।
পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলে সাধারণত বাড়ির আশপাশে আনারস রোপণ করলেও বাণিজ্যিকভাবে আবাদ দেখা যায় না। ফলে দেশের অন্য জেলা থেকে আনারস সংগ্রহ করে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা হয়। ফলে স্থানীয় বাজারগুলোয় আনারসের দাম থাকে ভালো।
আনারস ছায়াযুক্ত স্থানে ফালো ফলন দেওয়ায় এবার আম বাগানে আনারস চাষের কথা বলছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘এবার জায়েন্ট কিউ এবং নরসিংদীর ঘোড়াশাল জাতের আনারস চাষ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্ষার শেষদিকে বিশেষ করে জুন-জুলাই মাসে আনারসের চারা রোপণ করলে এবং একটু পরিচর্যা করলেই ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। প্রথম লাগানোর পর ১৮ মাসে এবং এরপর প্রতিবছর ফলন পাওয়া যায়। এবার কেন্দ্রে হেক্টরপ্রতি ৪০ টন ফলন পাওয়া গেছে।’
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্য অর্জন করতে জমির স্বল্পতা কমাতে হবে। এর জন্য আন্তঃফসল চাষ বাড়াতে হবে। তাই আম বাগানেই আনারস চাষ করা হয়েছে।’
এ কৃষি বিজ্ঞানী আরও বলেন, ‘কৃষকের আর্থ-সামাজিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে ফসল ফলাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, কৃষক যেন ভালো দামে ফসলটি বিক্রি করতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষি ব্যবস্থাপনায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কিভাবে এ অঞ্চলে লবণাক্ততা ও খরাসহিষ্ণু আম, আনারসের জাত উদ্ভাবন করা যায়; তা নিয়েও কৃষি বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন।’
নদী বন্দর / বিএফ