ফাইনালের আগে বারবারই নেইমার বলছিলেন, ‘মেসি হচ্ছে আমার গ্রেট ফ্রেন্ড। কিন্তু মাঠে যেহেতু আমরা একে অপরের বিপক্ষে, তখন হয়তো বন্ধুত্ব থাকবে না।’ খেলায় জয়-পরাজয় থাকবেই। একদল জিতবে, একদল হারবে। এটাই নিয়ম, এটাই সত্য। কোপার ফাইনালে মুখোমুখি মেসি এবং নেইমার। স্বাভাবিকভাবেই দু’জনের একজন হাসবেন, একজন কাঁদবেন। দু’জনের একসঙ্গে হাসার কোনো সুযোগই ছিল না।
মারাকানায় ফাইনাল শেষে হাসলেন মেসি, কাঁদলেন নেইমার। শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসলেন বর্তমান সময়ের সেরা ফুটবলারটি। অন্যদিকে নেইমার জিততে না পারার হতাশা নিয়ে কাঁদলেন। জার্সি টেনে এনে হতাশায় মুখ ঢাকলেন, চোখের জল লুকালেন। তাকে এসে জড়িয়ে ধরে স্বান্তনা দিলেন কোচ তিতে।
মেসির জন্য প্রথম হলেও নেইমারের জন্য প্রথম ছিল না। নেইমার এর আগে কনফেডারেশন্স কাপ জিতেছিলেন। তবে, নেইমারের জন্যও প্রথম ছিল। কোপা আমেরিকায় প্রথম শিরোপা জয়ের সুযোগ। ২ বছর আগে যে ব্রাজিল কোপা জিতেছিল, সেবার খেলতে পারেননি নেইমার। এবার তিনি মুখ ফুটেই বলেছিলেন, ‘আমিও প্রথম কোপা আমেরিকা জিততে চাই।’
কিন্তু জয়টা এলো মেসির জন্যই। দিনটাই আর্জেন্টিনার। ২২তম মিনিটে এঞ্জেল ডি মারিয়ার চিপ শটে সেই যে একমাত্র গোল হলো, সেটাই হয়ে দাঁড়ালো শিরোপা নির্ধারণী। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে তাই মেসিরা যখন উল্লাসে ফেটে পড়লেন, নেইমার তখন কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
তবে, খেলা শেষ, সুতরাং আবারও বন্ধুত্ব ফিরে এলো মেসি-নেইমারের মধ্যে। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ওঠার আগে এগিয়ে এসে মেসিকে অভিনন্দন জানালেন নেইমার। শিরোপা জয়ের অভিনন্দন জানাতে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন মেসিকে। মেসিও প্রিয় বন্ধুকে মনে হয় যেন দীর্ঘদিন পর কাছে পেলেন। জড়িয়েই ধরে রাখলেন দীর্ঘক্ষণ। এক আবেগঘণ দৃশ্যের অবতারণা হলো তখন।
পুরস্কার বিতরণের পর দেখা গেলো আরও একটি মধুর দৃশ্য। মেসি এবং নেইমার দু’জনই মিশে গেলেন একই রঙে। দু’জনের কারো গায়ে ছিল না কোনো জার্সি। জার্সি খুলে পাশাপাশি বসে ছবি তুললেন তারা দু’জন।
নদী বন্দর / পিকে