দক্ষিণ আফ্রিকায় লুটপাট ও সহিংসতার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২। এর মধ্যে ১০ জন পদদলিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার রাতে সোয়েটো শহরের একটি শপিং সেন্টারে লুটপাটের সময় এই ঘটনা ঘটে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা জেলে যাওয়ার জের ধরে দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। খবর বিবিসির।
গত এক সপ্তাহ ধরেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন শহরে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ঠেকানো এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থল জোহানেসবার্গকে রক্ষায় নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে।
আদালত অবমাননার দায়ে গত ৮ জুলাই থেকে জুমার কারাজীবন শুরু হয়। তারপর থেকেই সহিংসতা ও লুটপাটের ঘটনার সূত্রপাত। দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দাঙ্গা উস্কে দেয়ার ঘটনায় সন্দেহভাজন ১২ জনকে চিহ্নিত করেছে তারা। এছাড়া এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ বলছে, যেভাবে লুটপাট চলছে তা আরও কিছু দিন অব্যাহত থাকলে দেশটিতে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিতে পারে।
তবে এখনও পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী নসিভিওয়ে মাপিসা-নাকাকুলা। তিনি বলেন, জরুরি অবস্থা জারি করার মতো অবস্থায় যায়নি দেশ।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলছেন, ১৯৯০ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার সাক্ষী হলো তার দেশ। প্রধান প্রধান শহর এবং বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়েছে। এ থেকে বাদ যায়নি কুয়াজুলু-নাতাল এবং গাউতেং প্রদেশের ছোট ছোট শহরগুলোও।
গত কয়েকদিন ধরেই দিনরাত বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা, সম্পত্তি ধ্বংস এবং লুটপাট চলছেই। আদালতের নির্দেশে গত সপ্তাহ থেকে ১৫ মাসের কারাভোগ শুরু করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা।
দুর্নীতির তদন্তকারীদের তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সহযোগিতা না করায় তাকে এ দণ্ড দেন আদালত। প্রথমে তিনি আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানালে গ্রেফতারের সময়সীমা বেঁধে দেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। পরে অবশ্য জুমা ফাউন্ডেশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জ্যাকব জুমার দাবি, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার বলেও উল্লেখ করেছে। তবে এরপরেই নানা নাটকীয়তা শেষে ৭৯ বছর বয়সী এই নেতা আত্মসমর্পণ করেন।
নদী বন্দর / এমকে