কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের পর সারাদেশে শুরু হয়েছে লঞ্চ চলাচল। তবে বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথমদিনেই সদরঘাটে দেখা যায় ঘরমুখো মানুষের চাপ।
এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ভোর ৫টায় সদরঘাট থেকে সুরেশ্বর, ওয়াপদা, ইলিশা, ভোলা, চাঁদপুরসহ মোট ১৬টি লঞ্চ ছেড়ে যায়।
সরেজমিনে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা যায় লালকুঠি ঘাটে চাঁদপুরগামী যাত্রীদের ভিড়। এ সময় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার যে নির্দেশনা রয়েছে তা মানছেন না অনেক লঞ্চ মালিক ও যাত্রী।
লঞ্চের ডেকে গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন যাত্রীরা। ভাড়া ৬০ শতাংশের বেশি নিয়ে অর্ধেক যাত্রী নেয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁদপুরগামী এক যাত্রী বলেন, ‘লঞ্চের ভাড়া বেশি নিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু যাত্রী আগের মতই গাদাগাদি করে নিচ্ছে। এখন ডেকের ভাড়া আর সিটের ভাড়া ১৭০ টাকা করে নিচ্ছে। আগে ডেকের ভাড়া ছিল ১২০ টাকা এখন সিটের মতো ডেকের ভাড়া ১৭০ টাকা এটি হয়রানি আমাদের জন্য।’
এদিকে সকালে ভোলা ও বরিশালগামী ৮টি লঞ্চ ছেড়ে গেলেও বাকি লঞ্চগুলো বিকেল থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। তবে সকাল থেকেই সদরঘাটে ভিড় করছেন যাত্রীরা।
বরিশালগামী যাত্রী ইউসুফ বলেন, ‘আমি ঢাকার একটি মাদরাসায় চাকরি করি। মাদরাসা বন্ধ হলেও লকডাউনের কারণে বাড়ি যেতে পারিনি। আজ সন্ধ্যায় লঞ্চ ছাড়বে, তবে এখন সিট বুকিং দিয়ে রেখেছি ভিড় হওয়ার আশঙ্কায়।
ঢাকা নদী বন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা টার্মিনালে আছি। আমাদের ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে মাইকিং করে শতভাগ মাস্ক নিশ্চিত করেছি। প্রতিটি টিকিট কাউন্টারে আমাদের লোক মাস্ক বিতরণ করছে। এক্ষেত্রে যাত্রীরা অসচেতন। অনেককেই জোর করে মাস্ক পরাতে হচ্ছে। যাত্রী উঠানোর বিষয়ে আমরা লঞ্চ মালিক ও কর্মচারীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি। আমি নিজে সকাল থেকে বেশ কয়েকটি লঞ্চকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছাড়তে বাধ্য করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকাল থেকে আমাদের ১৮টি লঞ্চ সারাদেশে ছেড়ে গেছে। সাধারণত আমাদের দিনে ১৫০টি লঞ্চ আসা-যাওয়া করলেও যাত্রীদের সুবিধায় ঈদের আগে নতুন ৩০টি লঞ্চ যোগ হবে।’
লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সায়েদুর রহমান মিন্টু বলেন, ‘সরকারের সব নির্দেশনা আমরা মেনেই লঞ্চ চলাচল করছি।’
লঞ্চ বোঝাই যাত্রী নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফেরি বোঝাই করে যখন যাত্রী, গাড়ি নেয়া হয় তখন আপনারা কোথায় থাকেন? ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের ভিড় থাকবেই। তবে আমরা নিয়ম মেনেই চলব।’
এর আগে পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে লঞ্চ, ট্রেন, বাস চলাচলের অনুমতি দিয়ে চলমান বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। বুধবার মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে গত মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে বলা হয়।
একই সঙ্গে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ফের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
আগামী ২১ জুলাই দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।
নদী বন্দর / জিকে