কয়েক মাস ধরে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখছে বিশ্ব। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বয়ে গেল ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহ। জার্মানি, বেলজিয়ামসহ ইউরোপের একাধিক দেশে আঘাত হেনেছে বন্যা। আর ভারতে চলছে একের পর এক মেঘফাটা বৃষ্টিপাত, ভূমিধস। সব মিলিয়ে ভয়ঙ্কর এক পরিস্থিতির মুখোমুখি গোটা বিশ্ব। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামীতে এই ধরনের সংকট আরো বাড়বে।
আবহাওয়াবিদ অ্যান্ড্রিয়াস ফিঙ্ক জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে বলেন, আগামী দিনে বৃষ্টির প্রকোপ আরো বৃদ্ধি পাবে। তখন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ যেমন বাড়বে, তেমনই অল্পসময়ে অধিক বৃষ্টির প্রবণতাও বাড়বে।
ফিঙ্কের সঙ্গে একমত জুরিখের বিজ্ঞানী সেবাস্টিয়ান সিপল। তিনি জানান, তাপমাত্রা এক ডিগ্রি বাড়লে বাতাসে সাত শতাংশ অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প জমে। ওই জলীয় বাষ্প থেকেই পরে বৃষ্টি হয়। ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কেন বাড়ছে, তা সহজেই অনুমেয়- বৈশ্বিক উষ্ণায়ন।
একটি বিষয়ে প্রায় সকল বিজ্ঞানীই একমত- বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এভাবে ত্বরান্বিত হয়েছে মানুষের জন্যই। এর ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ওপর দিয়ে যে তাপপ্রবাহ বয়ে গেল, তার কারণও উষ্ণায়ন। মেরু অঞ্চলের ওপর যে বাতাস তৈরি হয়, তা এতদিন তাপপ্রবাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডাকে বাঁচিয়েছে। কিন্তু ক্রমশ সেই বাতাসের দাপট কমছে বলে তাপপ্রবাহ ঘটছে। এর কারণে স্বাভাবিক তাপমাত্রাও কয়েকগুণ বাড়ছে, যা থেকে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। একের পর এক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধির পেছনে বৈষ্ণিক উষ্ণায়নের পাশাপাশি চাঁদের কক্ষপথেরও একটি বড় অবদান রয়েছে। প্রতি ১৮ দশমিক ৬ বছর পরপর চাঁদের কক্ষপথে কিছুটা পরিবর্তন আসে। এর প্রভাবে জোয়ার-ভাটায়ও পরিবর্তন আসছে বলে মনে করা হচ্ছে। জোয়ারের পানি আগের চেয়ে বেশি ফুলেফেঁপে উঠছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী কয়েক বছরে পানির স্তর আরো উপরে চলে আসতে পারে, যার ফলে বন্যার আশঙ্কাও বাড়বে।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
নদী বন্দর / এমকে