টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত ভারতের মহারাষ্ট্র, মুম্বাই ও গোয়া। বন্যাকবলিত মহারাষ্ট্র ও গোয়ায় এখনো অনেকে নিখোঁজ বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে বন্যা ও ভূমিধসে এ পর্যন্ত ১৩৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এই রাজ্যের ৮৪ হাজার বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। গোয়ায় কয়েকশ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে চারশোর বেশি মানুষকে। এদিকে, মুম্বাইয়ে এখনো জারি রয়েছে রেড এলার্ট। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে ।
ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ভারতের দুই রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী এলাকাগুলোর অবস্থা শোচনীয়। গোটা রাজ্যে বৃষ্টির কারণে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দুইশোর কাছাকাছি। মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে, নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে গোয়ায়। টানা ভারি বর্ষণে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটছে রাজ্যটিতে। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে বহু ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা। মান্ডবী, দুধসাগর, খান্দেপার, চাপোরা, বলবন্তীর মতো বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে শহর রক্ষা বাঁধ।
বন্যা আর ভূমিধসের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম রেলওয়ের পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে গত তিন দিন ধরে। ভারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে কর্নাটকেও। এদিকে, মধ্যপ্রদেশের ২৪টি জেলায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানকার আগর-মালওয়া জেলায় ২১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ রোববার উত্তর গোয়ায় যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালের পরে এতো ভয়ানক পরিস্থিতি আর হয়নি রাজ্যের। এমনকি সেই সময়েও এতো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি যা গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও গোয়ার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বন্যা দুর্গতদের সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
প্রতিবছর দক্ষিণ এশিয়ায় জুন ও সেপ্টেম্বর মাসের এই সময়ের মধ্যে ভারি বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে বহু মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় অতিবৃষ্টির কারণে এমন দুর্যোগ বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র, আনন্দবাজার, এনডিটিভি, বিবিসি
নদী বন্দর / জিকে