অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের রাজধানী ব্রিসবেনে লকডাউন আরও বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার কর্তৃপক্ষ এই ঘোষণা দিয়েছে। অপরদিকে দেশটির অপর বৃহত্তম শহর সিডনিতে লকডাউন কার্যকরে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। অপ্রয়োজনে লোকজনের বাড়ির বাইরে বের হওয়া ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন সেনা সদস্যরা। তারা বিভিন্ন স্থানে টহল দিয়ে বিধিনিষেধ কার্যকরে সহায়তা করছেন। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে বিধিনিষেধ জারি করেছে অস্ট্রেলিয়া। লোকজন যেন এসব বিধিনিষেধ সঠিকভাবে পালন করেন সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কুইন্সল্যান্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় স্থানীয়ভাবে নতুন ১৩টি কেস শনাক্ত হয়েছে। গত এক বছরের মধ্যে ওই রাজ্যে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা।
মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর ব্রিসবেনে লকডাউন তুলে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনের সময় বাড়িয়ে আগামী রোববার পর্যন্ত করা হয়েছে। দেশটির বৃহত্তম দুই শহরে হঠাৎ করেই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে মহামারি নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অন্যান্য উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর চেয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভ্যাকসিন কার্যক্রমের গতি কিছুটা ধীর হলেও দেশটি তুলনামূলকভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪০০, যা বিভিন্ন দেশের তুলনায় অনেক কম। অপরদিকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে মারা গেছে ৯২৫ জন।
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, দেশের ১৬ বছর ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ ভ্যাকসিনের আওতায় চলে এলে লকডাউনের ‘সম্ভাবনা কমে’ যাবে। বর্তমানে দেশটিতে ভ্যাকসিনের আওতায় আসা লোকজনে সংখ্যা মাত্র ১৯ শতাংশ।
নিউ সাউথ ওয়েলস কর্তৃৃপক্ষ সোমবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিকে সোমবার করোনা পজিটিভ লোকজনের আইসোলেশন নিশ্চিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন সেনা সদস্যরা। ওই রাজ্যে ৬ সপ্তাহ ধরে লকডাউন জারি রয়েছে।
যাদের আইসোলেশনে থাকার কথা তারা আইসোলেশনে আছেন কীনা তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তবে এসব সেনা সদস্যরা নিরস্ত্র অবস্থায় পুলিশ কমান্ডের অধীনে থেকেই কাজ করছেন। সিডনির যেসব এলাকায় বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে সেসব এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেনা সদস্যরা বিভিন্ন রাস্তায় টহল দিচ্ছেন।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে, রাস্তায় বের হওয়া লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তারা কেন বাড়িতে না থেকে রাস্তায় বের হয়েছেন সে বিষয়ে তাদের কাছে উপযুক্ত কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে।
নদী বন্দর / পিকে