ওমান উপকূলে একটি তেলের ট্যাঙ্কারে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লন্ডনে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে যুক্তরাজ্য। তেলের ট্যাঙ্কারে হামলার ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ওই হামলায় তেল ট্যাঙ্কারের দুই ক্রু নিহত হন। এদের মধ্যে একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং অন্যজন রোমানিয়ার নাগরিক।
লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জোডিয়াক ম্যারিটাইমের অধীনে পরিচালিত হচ্ছিল এমভি মার্সার স্ট্রিট নামের ওই জাহাজটি। বৃহস্পতিবার ওই জাহাজে হামলার সময় এটি আরব সাগরের ওমান উপকূলে ছিল।
তেলের ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করেছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল। তবে ইরান প্রথম থেকেই ওই হামলার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ অভিযোগ করেছেন, এটি ছিল ইরানের ‘সন্ত্রাসী হামলা’।
তিনি বলেন, ইরান শুধু ইসরায়েলের সমস্যা নয়। বিশ্ব অবশ্যই নীরব থাকতে পারে না। তবে লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী এবং জাপানি মালিকানাধীন এই তেলবাহী জাহাজে আসলে কি ঘটেছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
অপরদিকে, এই হামলার পেছনে ইরানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে ইরান এই হামলা চালিয়েছে। এর যথাযথ জবাবও তারা পাবে।’ অপরদিকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, ‘তেল ট্যাঙ্কারে হামলায় ইরান একাধিক ড্রোন ব্যহার করেছে। ইরান ইচ্ছাকৃতভাবে এবং পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইরানকে এ ধরনের হামলা বন্ধ করতে হবে এবং নির্বিঘ্নে জাহাজ চলাচল করতে দিতে হবে।’
জোডিয়াকের ম্যারিটাইমের তথ্য অনুযায়ী, হামলার সময় জাহাজটিতে কোন পণ্য ছিল না। এর আগেও ওই এলাকায় ইরান ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে বেশ কয়েকটি হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনায় জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে হতাহতের ঘটনা বিরল।
এই ঘটনার কারণে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যে অঘোষিত ছায়া যুদ্ধ চলছে, সেটি আরও বেড়ে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে ইরান ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে এবং উভয়েই তা নাকচও করেছে।
এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খতিব জাদেহ সতর্ক করে বলেছেন, ইরান নিজেদের নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কোনও ছাড় দেবে না। কেউ এ ধরনের দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নিলে তার কড়া জবাব দেয়া হবে।
অপরদিকে, এর আগে ইরানের একটি আরবি ভাষার টেলিভিশনের খবরে অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, সিরিয়ার একটি বিমানবন্দরে যে ইসরায়েলি হামলা হয়েছে, তার পাল্টা জবাব হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে।
নদী বন্দর / জিকে