স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। ১৯ আগস্ট থেকে শর্ত সাপেক্ষে খুলবে দেশের সব পর্যটন কেন্দ্র। ১২ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
স্বপ্নপুরীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মো. দেলওয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর কৃত্রিম ভ্রমণ স্পট হল স্বপ্নপুরী। যা দেশ বিদেশের দর্শনার্থী, পর্যটক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। দিনাজপুর শহর থেকে ৫২ কি.মি. দক্ষিণে নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে স্বপ্নপুরীর অবস্থান। সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় ১৫০ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে নান্দনিক সৌন্দর্যের বিনোদন জগত স্বপ্নপুরী। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় লোকসান গুনতে হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্বপ্নপুরীর প্রবেশ মুখেই দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল আকৃতির পরীর গায়ে করা হয়েছে নতুন সাদা রং। গেট পেরিয়ে ঢুকতেই রাস্তার দুই ধারে দেখা যায় নানা রঙের মাটির ফলক। সারি সারি ফুল গাছের ভিতরে গজিয়ে উঠা ঘাস, লতা-পাতাগুলো তুলে পরিষ্কার করা হচ্ছে। বড় বড় গাছগুলোর বাড়তি অংশ কেটে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ চলছে। পুকুরে রাইডের জন্য যে নৌকা, স্পিডবোট আর প্যাডেল নৌকা আছে সেগুলোর শেষ মুহূর্তের কিছু কাজ করছেন মেকানিকরা। পাথরের তৈরি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম কিংবা ঘাড় গুঁজে বসে থাকা কৃষক সবকিছুতেই যেন নতুনের ছোঁয়া। ভেতরের প্রতিটি রাস্তাতেও নতুন করে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ চলছে। চিড়িয়াখানা থেকে ঘোড়ার রথ, শালবাগান, খোলামঞ্চ, নামাজঘর সবকিছুতেই নতুন করে সাজানো হচ্ছে।
বকুল গাছের বাড়তি পাতা কাটছিলেন আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মালিক নির্দেশ দিয়েছে সবকিছু ঠিকঠাক করতে, তাই বেশ কিছু লোক লাগিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে।’
ধোয়া-মোছার কাজ করছেন মামুন নামে এক কর্মচারী। কাছে যেতেই মুখে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলেন, ‘স্বপ্নপুরী খোলার সিদ্ধান্তে আমরাও সেই ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। খেলনা, রাস্তা-ঘাট সব কিছুই যেন ভূতুড়ে হয়ে গিয়েছিল। সব কিছু ধুয়ে আবার পরিস্কার করা হচ্ছে। মশক নিধন ওষুধও ছিটানো হচ্ছে।’
স্বপ্নপুরীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘পর্যটন কেন্দ্র না বলে এটাকে মানুষের কর্মক্ষেত্র বললে ভালো হয়। স্বপ্নপুরীর ওপর নির্ভর করে এর আশে পাশের ৪০০ মানুষ তাদের পরিবার চালায়। এছাড়াও আরও প্রায় ৫০০ মানুষ বিভিন্ন ভাবে এর সুফল ভোগ করে থাকেন। ১৫ মাস থেকে বন্ধ থাকায় এই সব পরিবারগুলো পড়েছেন সংকটে। পর্যটন কেন্দ্র খোলার অনুমতি পাওয়ায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা স্বপ্নপুরী বেড়াতে আসবেন তাদের বলতে চাই করোনা কিন্তু দেশে থেকে চলে যায়নি। তাই সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরে আসবেন।’
নদী বন্দর / এমকে