আমার বাড়ি চাঁদপুরে। স্কুল-কলেজে বিতর্ক করতাম। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম, হলে উঠলাম, বিতর্কের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তখন মা-বাবাই জোর দিয়ে বললেন, ‘বিতর্কটা ছেড়ো না।’ পড়ালেখায় ভালো রেজাল্ট করতে হবে, বাসা থেকে এমন চাপ কখনোই ছিল না। তবু আল্লাহর রহমতে ৩.৯৭ সিজিপিএ নিয়ে স্নাতক শেষ করেছি। বিভাগে আমার অবস্থান দ্বিতীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি নিয়মিত বিতর্ক করেছি। টেলিভিশন বিতর্ক, টিআইবি আয়োজিত জাতীয় বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। এ ছাড়া ব্লাড ডোনেশন ক্লাবে কাজ করেছি, বিএনসিসিতে (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর) ছিলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স সোসাইটির সঙ্গে বিভিন্ন পাঠচক্র, সেমিনারে অংশ নিয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদপুর জেলার শিক্ষার্থীদের একটা সংগঠন আছে, নাম ডাকাতিয়া। এই সংগঠনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করি। আমার মনে হয়, ক্লাসরুমের বাইরে সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোই আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনটা রঙিন করেছে।
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে পড়ে সময় বের করা কঠিন। আটটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ক্লাস, তার মধ্যে ল্যাবে কাজ করতে হয়। ক্লাস মিস হলে বন্ধু বা শিক্ষকদের সহায়তায় সেটা বুঝে নেওয়া যায়, ল্যাব মিস হলে সেটা আর পাওয়া যায় না। কখনো কখনো এত কিছু ‘ম্যানেজ’ করতে কষ্ট হয়েছে, কিন্তু সেটা গায়ে মাখিনি। গ্রামের স্কুল-কলেজে পড়েছি বলে কথায় আঞ্চলিকতার টান ছিল। বিতর্কের চর্চা চালু রেখেছি বলেই সুন্দর করে কথা বলা শিখেছি, নিজেকে উপস্থাপন করা শিখেছি। ভালো রেজাল্টের জন্য বিভাগ থেকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আর পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে জড়িত থাকার পুরস্কার হিসেবে পেয়েছি রোকেয়া স্বর্ণপদক।