আফগানিস্তান এখন তালিবানদের দখলে। সেখানে কায়েম হচ্ছে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত তালেবানদের শাসন। কট্টর এই দলটির শাসনামলে দেশটির সংস্কৃতি অঙ্গনে অন্ধকার নেমে আসবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। অনেক সংস্কৃতি কর্মীই দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন।
তাদের একজন ওয়ারিনা হোসেন। আফগানিস্তানের এই অভিনেত্রী সালমান খানের প্রযোজনায় ‘লাভযাত্রী’ ছবির নায়িকা।
সম্প্রতি আফগানিস্তানে তালেবানদের রাজত্ব কায়েম হতে দেখে এক প্রতিক্রিয়ায় ওয়ারিনা জানান, ভারতে এসে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন।
জানা যায়, ২০ বছর আগে তালেবানের অত্যাচার থেকে বাঁচতে ওয়ারিনার গোটা পরিবার আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে আসে ভারতে। আফিগানিস্তানের স্মৃতি মগজে থাকলেও, ভারতকেই নিজের দেশ হিসেবে মেনে নিয়েছেন ওয়ারিনা ও তার পরিবার। এখন ওয়ারিনার কাছে ভারতই হল একমাত্র দেশ। তবুও টিভির পর্দায় আফগানিস্তানের অবস্থা দেখে আতঙ্কে দিন কাটছে ওয়ারিনার।
দেশটিতে থাকা আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে ভয়ে রয়েছেন তিনি। এক ইংরেজি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ওয়ারিনা জানান, ‘আফিগানিস্তানে এই অবস্থার পর আবার শরণার্থীর সংখ্যা বাড়বে। এত মানুষকে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয় কোনো দেশের পক্ষেই। কিন্তু তাও আমি অনুরোধ করব সমস্ত রাষ্ট্রনেতাকে, এই কঠিন সময়ে আফগানদের পাশে দাঁড়ান। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন সৌভাগ্যবান যে ভারত সে সময়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে গ্রহণ করেছিল।’
ওয়ারিনা সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, আফগানিস্তানে শুধু শোষণ এবং অত্যাচার। আগের মতো সুন্দর আফগানিস্তান বোধহয় আর ফিরবে না।’
কয়েকদিন আগে আফগানিস্তানের অবস্থা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বলিউডের আরেক অভিনেত্রী সেলিনা জেটলি। সেলিনা জানিয়ে ছিলেন, ‘অনেকেই আমাকে ফোন করেছেন, অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন আফগানিস্তান নিয়ে কেন আমি চুপ রয়েছি। কেন আমি কোনো প্রতিক্রিয়া দিচ্ছি না। আমার এই চুপ থাকাটাকে দুর্বলতা হিসেবে ধরে নেবেন না। আমি এড়িয়েও যেতে চাইছি না।
আসলে আফগানিস্তানের অবস্থা দেখে আমি স্তম্ভিত। বিশ্বাসই করতে পারছি না, আমার জন্মভূমিতে এসব ঘটছে। চিন্তা হচ্ছে আফগানিস্তানে এবং গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে থাকা আফগান মানুষদের জন্য। সেই মানুষদের জন্য কষ্ট হচ্ছে, যারা নতুন করে আফগানিস্তানকে গোটা দুনিয়ার কাছে তুলে ধরছিলেন। তাঁদের এই প্রচেষ্টা একেবারেই চূর্ণ হয়ে গেল।
নিজেকে অসহায় লাগছে। ভিতর থেকে ভেঙে গিয়েছি। হ্যাঁ, আমি ভাগ্যবান যে আফগানিস্তানের সঙ্গে নাড়ির টান থাকলেও, আমি এখন সেই দেশে থাকি না। আর এটা সম্ভব হয়েছে, আমার প্রপিতামহীর জন্যই, যিনি সাহস করে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ভারত এমন এক দেশ, যা আমাদের পরিবারকে সম্মান দিয়েছে। মাথায় ছাদ দিয়েছে। আর সেই কারণেই আজ আমি আপনাদের সামনে আসতে পেরেছি। বলতে পারছি আমার ক্ষোভ, আমার প্রতিবাদের কথা…’
নদী বন্দর / পিকে